বাংলাদেশের রেফারিদের আজ (বুধবার) বিকেলে ২০২৫ ফিফা ব্যাজ দিয়েছে বাফুফে। সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী ১১ জন রেফারির হাতে এই ব্যাজ তুলে দেন। ব্যাজ তুলে দেওয়ার পর ফিফার বর্তমান ও সাবেক রেফারিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বাফুফে সভাপতি।
প্রায় আধ ঘণ্টার সেই বৈঠকে রেফারিরা নানা দাবি-দাওয়া ও আক্ষেপের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। ফেডারেশনের কাছে রেফারিদের পাওনা কোটি টাকার ওপর। রোজার ঈদের আগে রেফারিদের কোনো অর্থই প্রদান করেনি ফেডারেশন। এ নিয়ে আজ প্রায় সব রেফারিই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে চলতি লিগের কিছু অর্থ প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। তিনি আগামীকাল আবার দেশের বাইরে যাচ্ছেন বলে রেফারিদের জানিয়েছেন।
উন্নত বিশ্বের ফুটবল বা অনেক দেশে শীর্ষ রেফারিদের প্রধান পেশাই রেফারিং। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখনও রেফারিং পেশা হিসেবে নেওয়ার মতো হয়নি। কেউ শিক্ষকতা, কেউ অন্য চাকুরি বা ব্যবসার ফাঁকে রেফারিং করেন। যারা এশিয়ার শীর্ষস্তরে রেফারিং করেন তাদের অনেক সময়-শ্রম দিতে হয়। বাংলাদেশ থেকে দুই জন রেফারি রয়েছেন এএফসি এলিটের তালিকায়। এদের একজন চাকুরি থেকে সরে এসেছেন রেফারিংয়ের জন্য। এর বিপরীতে বাংলাদেশে রেফারিং থেকে পর্যাপ্ত সম্মানী ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। দেশের শীর্ষস্তরের খেলায় রেফারিদের ম্যাচ বন্টন প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফিফা ব্যাজধারীদের মাসিক ভিত্তিতে একটা সম্মানী প্রদানের বিশেষ দাবি এসেছে আজকের বৈঠকে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ ফিফা রেফারি হতে চায়। পাশাপাশি রেফারিদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কোর্স, প্রশিক্ষণের দাবিও জানিয়েছেন রেফারিরা। বাফুফে সভাপতি রেফারিদের এই সকল দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক রেফারি।
গত ২৬ অক্টোবর বাফুফে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও বাফুফে এখনও রেফারিজ কমিটির চেয়ারম্যানই মনোনীত করতে পারেনি। ১১ ডিসেম্বর ফেডারেশনের দ্বিতীয় নির্বাহী সভায় রেফারিজ একাডেমি করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেটারও কোনো বাস্তবায়ন নেই। চলতি মৌসুম প্রায় শেষের পথে, অথচ লিগের মাত্র পাঁচ রাউন্ডের সম্মানী পেয়েছেন রেফারিরা। ফলে আজকের আশ্বাস বাস্তবিক অর্থে কতটুকু পূরণ হয় সেটাই দেখার বিষয়।
রেফারিদের ফিফা ব্যাজ অনুষ্ঠানে বিগত বছরগুলোতে মিডিয়ার আমন্ত্রণ থাকত। বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম বছরে এসে মিডিয়া আনুষ্ঠানিক কোনো আমন্ত্রণ পায়নি। রেফারিদের বকেয়া এবং রেফারিজ চেয়ারম্যান নেই। এমন আরও অনেক ইস্যু এড়াতেই হয়তো ফেডারেশন এই পথে হেঁটেছে। অথচ সভাপতির সঙ্গে সভার পরপরই দাবি-দাওয়ার খবর বেরিয়ে এসেছে।
ফিফা রেফারি : সায়মন সানি, নাসির উদ্দিন, বিটুরাজ বড়ুয়া ও আলমগীর।
সহকারী রেফারি : মনির ঢালী (এএফসি এলিট), জুনায়েদ শরীফ, নুরুজ্জামান, সুজয় বড়ুয়া, সোহরাব হোসেন ও বিকাশ সরকার।
সহকারী নারী ফিফা রেফারি : সালমা আক্তার মনি (এএফসি এলিট)।
এসএন