গাজায় অভিযানে আপত্তি, ৯৭০ জন বিমানবাহিনীর সদস্যকে বহিষ্কারের হুমকি দিল ইসরায়েল

গাজায় অভিযান চালিয়ে যেতে আপত্তি জানানোর কারণে নিজেদের বিমান বাহিনীর ৯৭০ জন পাইলট, কর্মকর্তা ও সদস্যকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। 

বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিমানবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার বরাবর গাজায় সামরিক অভিযানে আপত্তি এবং এ অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়ে একটি চিঠি গিয়েছে এবং তাতে এই ৯৭০ জনের স্বাক্ষর রয়েছে। এই স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে নিয়মিত স্টাফদের পাশাপাশি রিজার্ভ পাইলট ও সেনা সদস্যরাও আছেন।

সূত্রের বরাত দিয়ে হারেৎজ জানিয়েছে, চিঠিটি পাওয়ার পর ইতোমধ্যে অনেক স্বাক্ষরকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররা এবং বলেছেন, যেসব স্বাক্ষরকারী তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করতে রাজি আছেন, কেবল তারাই বাহিনীতে থাকবেন।

এই হুমকি অবশ্য দৃশ্যত তেমন সফল হয়নি, কারণ মাত্র ২৫ জন স্বাক্ষরকারী নিজের নাম প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

স্বাক্ষরকারীদের ভাষ্য, গাজায় সামরিক অভিযান চলছে রাজনৈতিক কারণে। এর সঙ্গে ইসরায়েলের নিরাপত্তার কোনো সম্পর্ক নেই।

একই বক্তব্য অবশ্য ইসরায়েলের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও। দীর্ঘদিন ধরে তারা অভিযোগ করে আসছেন যে, গাজায় সামরিক অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ইসরায়েলের নিরাপত্তা নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নিজের গদির নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব।

এদিকে বহিষ্কারের হুমকির পর ওঠা সমালোচনার জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার মেজর জেনারেল তোমের বার বলেন, এটি কোনো শাস্তিমূলক নয়, বরং যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। কারণ যারা স্বাক্ষর করেছেন, তারা অভিযানে তাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করবেন কি না তা নিয়ে বাহিনী সন্দিহান এবং যদি তারা দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করেন, তাহলে জিম্মি মুক্তির ব্যাপারটি বাধাগ্রস্ত হবে।

তোমের বার আরও বলেন, যুদ্ধ চলাকালে এ ধরনের চিঠি ‘বৈধ নয়’। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে শিগগিরই গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেবে নেতানিয়াহু সরকার।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলের আগ্রাসনের ফলে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারানোর পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জন ফিলিস্তিনি।

অন্যদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি, মৃতের সংখ্যা ৬২ হাজারের বেশি। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজার হাজার নিখোঁজকে মৃত ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: জামায়াত আমির Jul 04, 2025
img
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভগ্নিপতি লতিফ ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ Jul 04, 2025
img
আমার মুক্তির প্রথম সোপান হচ্ছে আবু সাঈদ : এটিএম আজহার Jul 04, 2025
img
এমন কাউকে নির্বাচিত করবেন না যাকে পালিয়ে যেতে হয় : জ্বালানি উপদেষ্টা Jul 04, 2025
img
বাংলা থেকে হিন্দি সিরিয়ালে পাড়ি জমালেন মিশমি দাস Jul 04, 2025
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি: জামায়াত Jul 04, 2025
img
আ. লীগ বিলুপ্ত হয়ে যাবে, দলটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা অসম্ভব : রেজা কিবরিয়া Jul 04, 2025
img
জীবনের জটিল গল্প নিয়ে শানায়ার প্রথম সিনেমা Jul 04, 2025
img
পুঁজিবাজারের মাঠ প্রস্তুত, বিনিয়োগে ভালো ফলের সুযোগ রয়েছে : বিএসইসি কমিশনার Jul 04, 2025
img
পিএসসি’র সংস্কার চেয়ে শাহবাগ ‘ব্লকেড’ Jul 04, 2025
img
অনুশীলনে নেই লিটন, ফিরেছেন রিশাদ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে Jul 04, 2025
img
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন বাণিজ্য সচিব Jul 04, 2025
img
ব্যাংকক থেকে মিষ্টি খুনসুটি শেয়ার করলেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা Jul 04, 2025
img
৬২ রান করেও তামিম বললেন, নিজের সেরাটা দিতে পারিনি Jul 04, 2025
দীপিকার অর্জনে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি Jul 04, 2025
হোটেলে হাঁটছিলাম, কেউ আমার দিকে ঘুরেও তাকাল না: অভিষেক Jul 04, 2025
চলতে পারে বরফে, উড়তে নয়—দেশে প্রথম হোমমেড ‘এয়ার স্লেজ’! Jul 04, 2025
“জুলাই শুধু এক দলের নয়!"যে কারণে সরে গেলেন উমামা ফাতেমা! Jul 04, 2025
৫৪ বছরে বহু ও ১৭ বছরও বহু রাজনীতি দেখেছেন কিন্তু মুক্তি দিয়েছে ছাত্র জনতা Jul 04, 2025
img
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশে পরিবর্তন, তদন্ত ছাড়া আর শাস্তি নয় Jul 04, 2025