বাংলা নববর্ষ—শুধু একটি তারিখ নয়, বাঙালির আবেগ, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক। বাংলা ক্যালেন্ডারে বছরের প্রথম দিনটি পহেলা বৈশাখ। দিনটিকে ঘিরে বর্ণিল আয়োজনের পাশাপাশি থাকে বাহারি খাবারের আয়োজন।
বহু বছরের সংস্কৃতি ধরে বাঙালিরা নববর্ষের প্রথম দিন মাটির সানকিতে করে পান্তা-ইলিশ খেয়ে দিনটি উদ্যাপন করে থাকে। যাকে বাঙালিয়ানার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেও দেখেন অনেকে।
পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষের কথা শুনলেই সবার আগে মাথায় আসে পান্তা-ইলিশের কথা। যা পহেলা বৈশাখের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
তবে অনেকেই হয়ত জানেন না অন্য খাবারের চেয়ে পান্তাভাত পুষ্টিগুণে এগিয়ে রয়েছে। পান্তাভাতে মজুত থাকে প্রচুর আয়রন, ক্যালসিয়াম আর পটাশিয়াম। গরমকালে গ্রামের মানুষ পান্তাভাত খেতে ভালোবাসেন—এ যেন এক নিজস্ব স্বস্তি। শহুরে জীবনে যদিও পান্তার তেমন জায়গা নেই, তবু এর উপকারিতা জানলে অনেক আধুনিক মনও চমকে উঠবে।
শুধু গরমে আরাম এনে দেয় না—পান্তা ভাত আসলে এক স্বাস্থ্যকর খাবার, যার উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন।
তবে চলুন জেনে নেওয় যাক পান্তার সব উপকারিতা-
১. পান্তা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, চুল রাখে ঝলমলে ও প্রাণবন্ত। এতে থাকে প্রোবায়োটিক উপাদান, যা অন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক, আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে জোরদার। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নানা সমস্যার হাত থেকেও রক্ষা করে এই সহজ সরল খাবারটি।
২. পান্তায় জন্মানো ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী। হজমে সহায়তা করে, খাবার দ্রুত ভেঙে দেয়—পেটে আর ভারি লাগে না।
৩. পান্তা ভাতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় এটি শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। আবার এতে থাকা ভিটামিন বি১২ ক্লান্তি কাটাতে, দুর্বলতা কমাতে ও শরীরকে সতেজ রাখতে ভূমিকা রাখে।
৪. ঘুম না-আসা, মানে অনিদ্রায় ভোগা মানুষের জন্যও পান্তা হতে পারে এক প্রাকৃতিক উপশম।
অতএব, এই ‘সাধারণ’ খাবারের গুণাগুণ, আদতে অসাধারণ।
এসএন