সুদানে বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত ৪০০ জনেরও বেশি: জাতিসংঘ

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের দারফুর অঞ্চলে আধাসামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সাম্প্রতিক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ। জাতিসংঘ এ তথ্য “বিশ্বস্ত সূত্রের” বরাত দিয়ে জানিয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহে এল-ফাশের শহরের আশপাশে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর ভয়াবহ স্থল ও বিমান হামলা চালায় আরএসএফ। শহরটি বর্তমানে দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা শেষ প্রধান শহর, যেটির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এই আধাসামরিক বাহিনী।

জাতিসংঘ জানায়, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তারা ১৪৮টি মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করতে পেরেছে। তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বিবিসিকে বলেন, “বিশ্বস্ত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে।” তিনি আরও জানান, রোববারের সহিংসতা এখনো এই হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯ জন ত্রাণকর্মী রয়েছেন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এল-ফাশের আশপাশের জামজাম ও আবু শৌক শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৭ লাখ মানুষ বসবাস করছেন, যাদের অনেকেই মানবিক সহায়তা না পেয়ে দুর্ভিক্ষের মতো সংকটে দিন কাটাচ্ছেন।

শনিবার এক বিবৃতিতে আরএসএফ দাবি করেছিল, তারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়নি। বরং হামলার দৃশ্য সাজানো হয়েছে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে। তবে পরদিন আবার আরএসএফই দাবি করে, তারা জামজাম শিবির “মুক্ত” করেছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনী শিবিরটিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছিল এবং সাধারণ মানুষদের ঢাল বানাচ্ছিল।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধ ইতোমধ্যে বিশ্বে অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

আগামী মঙ্গলবার গৃহযুদ্ধটি তৃতীয় বছরে পা দিচ্ছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক আবারও সংঘাতে জড়িত সব পক্ষকে বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে শান্তির পথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।


এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অন্যায়কারী যেই হোক, বিএনপি সমর্থন করে না: তারেক রহমান Jul 13, 2025
img
মিটফোর্ডের নৃশংসতা সরকারের ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ : সাকি Jul 13, 2025
img
বিশ্ববাজারে আবারও তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী, চিন্তায় ক্রেতারা Jul 13, 2025
img
হাসিনার বুলেট যেখানে ব্যর্থ, বিএনপির পাথরও থামাতে পারবে না: রাফি Jul 12, 2025
img
নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ Jul 12, 2025
img
এই চাঁদাবাজ-দুর্নীতিবাজ সিস্টেমের পরিবর্তন করব : নাহিদ ইসলাম Jul 12, 2025
মিটফোর্ডের ঘটনায় বিএনপিকে নিয়ে যা বললেন জুলাইয়ের যোদ্ধা? Jul 12, 2025
img
মাস্তি ইউনিভার্সে ২০ বছর পর ফিরছেন জেনেলিয়া Jul 12, 2025
img
ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় শাহবাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশাল মিছিল Jul 12, 2025
img
ভারত যোগ না দিলেও বাংলাদেশেই হবে এসিসির সভা: মিঠু Jul 12, 2025
img
রাবণ হয়ে ফিরছেন যশ, পুরো রামায়ণ পার্ট ওয়ানেই থাকছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় Jul 12, 2025
img
চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদল নেতা এমদাদুল বহিষ্কার Jul 12, 2025
img
চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে নিট বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি Jul 12, 2025
img
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের সম্প্রচার স্বত্ব বেচাকেনায় চমক Jul 12, 2025
img
‘আমিষ ও প্রোটিন নিশ্চিত করা হলে কমবে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা’ Jul 12, 2025
img
‘বাঘি ৪’ সিনেমায় অ্যাকশনের রাজপুত্র হয়ে ফিরছেন টাইগার শ্রফ! Jul 12, 2025
img
পিএসজির সাফল্যে একক কৃতিত্ব দিচ্ছেন না কোচ Jul 12, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘন করলেও সবাই চুপ থাকে: মনজিল মোরসেদ Jul 12, 2025
দেশের চলমান ইস্যু নিয়ে যা বললেন জাবি ছাত্রদল Jul 12, 2025
অটোরিকশা বন্ধ করে নিকুঞ্জবাসীর দৃষ্টান্ত স্থাপন! Jul 12, 2025