নোয়াখালীতে চাঁদা দাবির অভিযোগে সমন্বয়কসহ গ্রেফতার ৫

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়কসহ পাঁচজনকে এক যুবককে আটকে রেখে চাঁদা দাবির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে তাদের নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে সোমবার রাতে উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মহিউদ্দিনের ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সমন্বয়ক আবদুল্লাহ আল মামুন (২৫), একই ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. মনিরুল ইসলাম আকাশ (২১), একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবু তাহেরের ছেলে মো. পারভেজ হোসেন (৩০), ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে অহিদুল ইসলাম (২৪) ও বাটইয়া ইউনিয়নের মো. সালাউদ্দিনের ছেলে মো. ইউনুস হোসেন রাজু (২২)।

চাঁদা দাবির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বাটইয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সফি উল্যাহ।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সফি উল্যাহর ছেলে মো. তাফসীরুল ইসলাম রাফসানকে (১৯) সোমবার বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আটকে রাখেন অভিযুক্তরা। তাকে মাদকসহ আটক করেছেন বলে দাবি করেন তারা। এরপর ছেলের মোবাইল নম্বর থেকে কল করে ডিবি ও সেনাবাহিনী পরিচয় দিয়ে তার বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

টাকা না দিলে ছেলেকে মারধরের হুমকি দেন তারা।

দাবিকৃত টাকা বাটইয়া ইউনিয়নের কৃঞ্চারটেক মসজিদের সামনে রাখার জন্য বলা হয়। ভুক্তভোগীর বাবা ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যান। কিন্তু প্রশাসনের লোক তার সঙ্গে আছে ভেবে স্থান পরিবর্তন করতে থাকেন অভিযুক্তরা।

পরবর্তীতে রাফসানকে মাইজদী নিয়ে ডিবি পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারা। এতে তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ হয় সফি উল্যাহর। তিনি জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল করে বিষয়টি জানান। সেইসঙ্গে সেনাবাহিনী ও পুলিশকেও জানান। পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোবাইলের কল রেকর্ড শুনে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাতে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা চাঁদা দাবির কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় সফি উল্যাহ বাদী হয়ে কবিরহাট থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় আরো চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত পাঁচজনের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। তিনি জেলার সমন্বয়ক ছিলেন। অন্যরা আমাদের সঙ্গে যুক্ত নন। উপজেলায় আমাদের কোনো কমিটি নেই। তবে মামুন ষড়যন্ত্রের শিকার কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

কবিরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মঞ্জুর আহমদ বলেন, ‘এ ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

এসএম/টিএ

Share this news on: