আমদানি বন্ধের অজুহাতে বেড়েছে চালের দাম, বিপাকে পাইকাররা

দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে শুল্কমুক্তভাবে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সেই মোতাবেক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়। এমনকি গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের দিনেও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে। পরের দিন থেকে ভারত থেকে চাল আমদানির শেষদিন-এমন খবরে হিলি স্থলবন্দরে পাইকারিতে দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা।

এদিকে চালের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন পাইকাররা। তাদের দাবি, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কয়েকদিনে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে, তারপরও দাম বৃদ্ধি। আমদানিকারকরা বলছেন, চাল আমদানি বন্ধ হওয়ায় দামটা একটু বেড়ে গেছে। তবে যদি আর কয়েকদিন আমদানির সময় সরকার বাড়িয়ে দেয় তাহলে দামটা সহনীয় পর্যায়ে থাকতো।

ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সেইসঙ্গে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় চালের আমদানি শুল্ক। এরপর গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে চাল আমদানি, তবে দেশের হাওর অঞ্চলে নতুন ধান উঠতে শুরু করায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) থেকে ভারত থেকে চাল আমদানির দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হয়েছে।ফলে গত ১৬ এপ্রিল থেকে চাল আমদানি বন্ধ যায়।

তবে যদি কেউ চাল আমদানি করতে চায় তাহলে ৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করতে পারবেন। এ কারণেই শেষ দিকে আমদানি বেড়েছে। গত কয়েকদিন থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন চাল আমদানি হয়েছে গড়ে ১০০- ১৫০ ভারতীয় ট্রাক।

হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমান কাটারি চাল বিক্রি হয়েছে ৬৮ থেকে ৬৯ টাকা কেজি দরে, আর সর্ণা বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে। গত কয়েকদিন আগেও কাটারি চাল বিক্রি হয়েছে ৬৪ টাকা কেজি দরে।তবে দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন পাইকাররা।

বন্দরে চাল কিনতে আসা শাহিনুর ইসলামসহ কয়েকজন পাইকার জানান, ১৫ এপ্রিলের আগে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ব্যাপকহারে চাল আমদানি হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক চাল আমদানি হয়েছে। এমনকি পহেলা বৈশাখের দিনও চাল আমদানি হয়েছে ২০১ ট্রাকে ৮ হাজার ৪শ ৮১ মেট্রিকটন। তারপরও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বন্দর থেকে চাল বিক্রি না করে গুদামজাত করেছেন এবং দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের দাবি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি বাজার মনিটরিং করা যেত, তাহলে দামটা নিয়ন্ত্রণে থাকতো।

আমদানিকারক এস এম রেজা বিপুল ও নুর ইসলাম বলেন, চাল আমদানি করতে গাড়ি ভাড়া বেশি পড়ে গেছে, তাছাড়া চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামটা একটু বেড়ে গেছে। আমাদের উত্তরবঙ্গে ধান কাটতে এখনো ১ মাস সময় লাগবে, তাই আর কয়েকদিন আমদানির অনুমতি দিলে দেশের বাজারে দামটা সহনীয় পর্যায়ে থাকতো।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, ভারত থেকে চাল আমদানির সময় বৃদ্ধির জন্য বন্দরের আমদানিকারকরা আবেদন করেছে। কিন্তু সরকার সময় বৃদ্ধি না গত ১৫ এপ্রিল থেকে চাল আমদানি বন্ধ করেছে। ভারত থেকে ৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করা সম্ভব হবে না। আর মাত্র ১৫ দিন চাল আমদানির সময় বৃদ্ধি করলে বাজারে ও চালের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়তো না।

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি স্বাভাবিক ছিল। আমদানিকারকরা যাতে দ্রুত বাজারজাত করতে পারেন সেই লক্ষ্যে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত ছাড়করণ করা হয়েছে।


এমআর/এসএন


Share this news on:

সর্বশেষ

img
আল-কায়েদার হুমকিতে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি Apr 19, 2025
img
সম্পর্ক জোরদারে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন হুনানের গভর্নর Apr 19, 2025
img
জাপানে সাত ডলার চুরি করে হারালেন ৮৪ হাজার ডলার Apr 19, 2025
img
মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত জান্তা ও বিরোধী দল Apr 19, 2025
img
বায়ুদূষণে আজ শীর্ষে ঢাকা, বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ Apr 19, 2025
img
সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে অনীহা, ৩১৬ মিলের নিবন্ধন বাতিল Apr 19, 2025
img
পিএসএলে ঝলক দেখানো রিশাদকে নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও Apr 19, 2025
img
ডেমি মুর আগে থেকেই জানতেন, অস্কার উঠবে মাইকির হাতে! Apr 19, 2025
img
পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ Apr 19, 2025
img
হাসপাতালে ভর্তি পরিচালক সৃজিত মুখার্জি Apr 19, 2025