বলিউডে এক সময়ের অন্যতম চর্চিত প্রেমজুটি ছিলেন শহিদ কাপুর ও কারিনা কাপুর। বাস্তব আর পর্দা মিলিয়ে তাদের রসায়ন নিয়ে মাতামাতি ছিল ভক্তদের মাঝে। কিন্তু হঠাৎ করেই ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক। সময়ের ব্যবধানে তারা জীবন গুছিয়ে নেন অন্য কারো সঙ্গে। তবু শহিদ-কারিনার প্রেমগল্প আজও বলিউড প্রেমীদের স্মৃতিতে গেঁথে আছে।
২০০৪ সালে ‘ফিদা’ সিনেমার শুটিং সেটেই প্রথম পরিচয় শহিদ ও কারিনার। দুজনই তখন বিচ্ছেদের ধাক্কা সামলে উঠছেন। শহিদের সঙ্গে দীর্ঘ প্রেম ভাঙার পরে ছিলেন কারিনা, আর কারিনাও তখন হৃতিক রোশনের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টেনেছেন। ফলে তারা খুব দ্রুতই একে অন্যের কাছাকাছি চলে আসেন।
প্রথমদিকে কারিনার মা ববিতা আপত্তি করলেও সময়ের সঙ্গে মেয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। কারিনা নিজেই তার কাছের মানুষদের বলেছিলেন, শহিদকেই বিয়ে করতে চান।
‘চুপ চুপ কে’, ‘৩৬ চায়না টাউন’, ‘মিলেঙ্গে মিলেঙ্গে’—একসঙ্গে কাজ করতে করতেই শহিদ-কারিনার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। কারিনার অভিনয়জীবনে ‘যব উই মেট’ যেন মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক মাইলফলক। কারিনার ভাষ্য অনুযায়ী, এই সিনেমায় কাজ করতে শহিদেরই উৎসাহ ছিল সবচেয়ে বেশি। সিনেমাটি বিশাল সাফল্য পায়, তবে তখনই বাস্তব জীবনে ভেঙে যায় তাদের সম্পর্ক।
‘যব উই মেট’-এর সাফল্যের রেশ না কাটতেই শুরু হয় ‘তাশান’-এর শুটিং। এই ছবির সেটেই সাইফ আলি খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কারিনার। তখনই শহিদ-কারিনা সম্পর্কে আসে দুরত্ব। একসময় তা ভেঙে যায়। গুঞ্জন রয়েছে, শহিদকে না জানিয়েই সাইফের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান কারিনা, যা শহিদের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা মনে হয়েছিল।
বিচ্ছেদের পরে দুজনেই ভিন্ন পথ বেছে নেন। কারিনা ২০১২ সালে বিয়ে করেন সাইফ আলি খানকে, শহিদ ২০১৫ সালে ঘর বাঁধেন মীরা রাজপুতের সঙ্গে।
শহিদ একবার মন্তব্য করেছিলেন, “আমরা দুজনই ছিলাম দুই মেরুর মানুষ—কারিনা চঞ্চল, আমি গম্ভীর। পারস্পরিক পার্থক্যই হয়তো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে দেয়নি।”
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কারিনা বলেন, “‘তাশান’ ভেবেছিলাম ক্যারিয়ার পাল্টাবে, বদলে দিল জীবন। আর ‘যব উই মেট’—সেটা বদলে দিল ক্যারিয়ার।”
বিচ্ছেদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মনে হয়, সেটা নিয়তিরই লেখা ছিল। আমরা আলাদা পথে হেঁটে গেছি, আর সেখানেই থেমে গেছে আমাদের গল্প।”
অনেক বছর পর শহিদ-কারিনা একসঙ্গে কাজ করেন ‘উড়তা পাঞ্জাব’ ছবিতে। যদিও সিনেমাটিতে তাদের কোনো দৃশ্য একসঙ্গে ছিল না, তবুও এটাই প্রমাণ করে সময়ের সঙ্গে অতীতের ক্ষত কিছুটা মুছে যায়।
এসএস