মঙ্গলের অতীত একসময় ছিল উষ্ণ ও সিক্ত—এমন এক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পেয়েছে নাসার কিউরিওসিটি রোভার। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার ছয়চাকার এই রোভারটি সম্প্রতি মঙ্গলের গেইল ক্রেটার নামক এক বিশাল গহ্বরে খনন করে ‘সিডেরাইট’ নামের একটি খনিজ আবিষ্কার করেছে। খনিজটি কার্বন ডাই-অক্সাইডে গঠিত।
এই খনিজের উপস্থিতি প্রমাণ করে, একসময় মঙ্গলে ঘন কার্বন ডাই-অক্সাইডে পূর্ণ বায়ুমণ্ডল ছিল। ওই বায়ু গ্রীনহাউস প্রভাবে গ্রহটিকে উষ্ণ রাখত। যার ফলে সেখানে তরল পানির অস্তিত্ব ছিল। এটি ইঙ্গিত দেয়, মঙ্গলে ছিল নদী, হ্রদ কিংবা সমুদ্রের মতো পানির আধার—যেখানে জীবনের সম্ভাবনা ছিল।
গবেষকরা বলছেন, পূর্বে এত স্পষ্টভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইডের চিহ্ন মঙ্গলপৃষ্ঠে মেলেনি। এবারকার আবিষ্কারে মঙ্গলের অতীত পরিবেশ ও কার্বন চক্র নিয়ে ধারণা আরও স্পষ্ট হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ বেঞ্জামিন টুটলোর মতে, যদি মঙ্গলকে একসময় বাসযোগ্য করতে কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রয়োজন হতো, তাহলে এত কম পরিমাণ কার্বোনেট খনিজ এতদিনে কেন পাওয়া গেল—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ছিল বিজ্ঞানীদের চেষ্টা।
এই আবিষ্কার থেকে ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলের অনেক পাথরের ভেতরই হয়তো কার্বোনেট খনিজ লুকিয়ে আছে। আর এদের ভেতরেই আটকে রয়েছে সেই অতীতের কার্বন, যা একসময় গ্রহটিকে উষ্ণ রেখেছিল।
গবেষকেরা বলছেন—মঙ্গলের কার্বন চক্র ছিল ভারসাম্যহীন। সেখানে যতটা কার্বন পাথরে জমা হয়েছে, ততটা বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসেনি। আর এই ভারসাম্যহীনতাই হয়তো মঙ্গলের আজকের নিষ্প্রাণ চেহারার অন্যতম কারণ।
আরএম/টিএ