প্রযুক্তির দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটানো ইলন মাস্ক এবার যেন নজর দিয়েছেন অন্য এক ‘মিশনে’—নিজের জিন ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গড়ার পরিকল্পনায়। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে মাস্কের সন্তান ধারণ সংক্রান্ত এক বিস্ময়কর দৃষ্টিভঙ্গি, যা অনেকেই তুলনা করছেন ২১ শতকের চেঙ্গিস খানের সঙ্গে।
বর্তমানে মাস্কের স্বীকৃত সন্তানের সংখ্যা ১৪। তাদের মা চারজন নারী—লেখিকা জাস্টিন উইলসন, গায়িকা গ্রিমস, নিউরালিংকের নির্বাহী শিভন জিলিস এবং ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাশলে সেন্ট ক্লেয়ার। তবে সূত্র বলছে, এই সংখ্যা এর চেয়েও বেশি হতে পারে।
জার্নালের প্রতিবেদনটির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ২৬ বছর বয়সী অ্যাশলে সেন্ট ক্লেয়ার। তিনি জানান, মাস্ক তার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সন্তান নেওয়ার প্রস্তাব দেন। এক পর্যায়ে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য একটি কড়া চুক্তিতে সই করতে বলেন মাস্ক, যার বিনিময়ে দেওয়া হতো মোটা অঙ্কের অর্থ। তবে অ্যাশলে চুক্তিতে সই না করে বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। তার ভাষ্য, "আমি চাই না আমার সন্তান গোপনে বড় হোক। তার নিজের পরিচয় জানার অধিকার আছে।"
একই ধরনের প্রস্তাব পেয়েছেন জাপানি ক্রিপ্টো ইনফ্লুয়েন্সার টিফানি ফংও। তিনিও বিষয়টি ফিরিয়ে দিয়ে জানান, তিনি একটি স্বাভাবিক পরিবারে সন্তান চান, ‘প্রজেক্ট বেবি’ নয়।
মাস্ক অবশ্য এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, "এসব খারাপ মানের গসিপ।" তবে একইসঙ্গে আবারো জোর দিয়ে বলেন, "মানব জাতির ভবিষ্যৎ বিপন্ন করছে কমে যাওয়া জন্মহার। এটা মোকাবিলা করতে হলে আরও সন্তানের প্রয়োজন, বিশেষত মেধাবী মানুষের।"
বিশ্লেষকরা বলছেন, মাস্কের এই কর্মকাণ্ড ব্যক্তিগত কৌতূহল নয়, বরং তার বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গিরই অংশ। এটি যেন এক আধুনিক যুগের নতুন সাম্রাজ্য বিস্তারের রূপ—তবে তরবারির বদলে হাতিয়ার এখন প্রযুক্তি, প্রভাব ও জিনবিজ্ঞান।
যদিও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে, তবুও মাস্কের এই ব্যতিক্রমী অবস্থান যে সমাজ ও জেনেটিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনা তৈরি করছে, তা বলাই যায়। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যেন এবার ঘটছে আধুনিক রূপে—চেঙ্গিস খানের মতো নয়, বরং এক্স প্ল্যাটফর্ম ও নিউরালিংকের মাধ্যমে।
এসএস