বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব তাদের দীর্ঘ সম্পর্ক আরো জোরদার করে একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। আমরা (চীন) আমাদের সহযোগিতার ক্ষেত্রে জনগণ কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে যাব, প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা কাজে লাগাব এবং শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্য সেবা খাতে সম্পর্ক গড়ে তুলব। কারণ এই ক্ষেত্রগুলো বাংলাদেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আজ রবিবার ইউনান প্রাদেশিক সরকার এবং ঢাকার চীনা দূতাবাস যৌথভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘চীন-বাংলাদেশ জনগণের সাথে জনগণের বিনিময় বছর : ইউনান শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রচারণা’ শীর্ষক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্রদূত এ মন্তব্য করেন।
চীনে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফল সফরের বিষয়টি উল্লেখ করে ইয়াও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সফর দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।’
জনস্বাস্থ্য ও কল্যাণ খাতে বাংলাদেশের সাথে কাজ করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইউনান প্রদেশ ভিসা সহায়তা দিয়ে এখন আরো বেশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চিকিৎসার সুযোগ দেবে।
ইয়াও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য ইউনানে যাবেন এবং তারা সর্বোত্তম পরিষেবা পাবেন।’
চট্টগ্রাম থেকে ইউনান পর্যন্ত সরাসরি নতুন বিমান রুট পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন সম্পর্কে মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এই ব্যবস্থা দুই দেশের মধ্যে সংযোগ এবং আদান-প্রদান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।’
তিনি বলেন, ‘আরেকটি মাইলফলক হলো ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চীনে বাংলাদেশি তাজা আম রপ্তানি। মে মাসের শেষের দিকে প্রথমবারের মতো চীনের কুনমিং ও ইউনানে আম পৌঁছে যাবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ইয়াও বলেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে, তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং পারস্পরিক পরিকল্পনা ও সুবিধার নীতিমালা সমুন্নত রাখবে।’
বাংলাদেশি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইউনানের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৬টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ১০টি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর এবং বাংলাদেশি প্রতিপক্ষগুলোর সাথে ৫টি যৌথ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বর্তমানে ঢাকায় রয়েছে।’
আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং সংযোগ জোরদারে বেইজিংয়ের দৃঢ় সংকল্পের ওপর জোর দিয়ে ইয়াও বলেন, ‘চীনের সহযোগিতার দ্বার বন্ধ হবে না।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবো এবং ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
এমআর/টিএ