সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতির সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। সোমবার (২১ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কমিশন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করে।
কমিশন তাদের প্রতিবেদনে সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতির বিষয় উল্লেখ করে ‘প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহ ভিত্তিক, অভিবাসী, স্বনিয়োজিত শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক শ্রম আইনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। এই লক্ষ্যে, কাজের স্বীকৃতি ও পরিচয়পত্র প্রদান, নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাকর-শোভন কর্ম পরিবেশ, চাকরির অপ্রাতিষ্ঠানিকরণ, অস্থায়ী ও এজেন্সি নির্ভর নিয়োগের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।’
শ্রমিকের নিজের ও পরিবারের মর্যাদাকর জীবনযাপন উপযোগী ন্যায্য মজুরি (লিভিং ওয়েজ), উন্নয়নে ন্যায্য অংশীদারিত্ব ও হিস্যা প্রাপ্তির অধিকার, প্রত্যেকের জন্য নিরাপদ কাজ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ, দুর্ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং নিজের ও পরিবারের সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার, প্রত্যেকেরই অবসর, কর্ম অক্ষমতা, অসুস্থতা, মাতৃত্বকালীন সময় বা যেকোনো প্রতিকূল অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তা প্রাপ্তি এবং কোনো না কোনো সামাজিক নিরাপত্তা স্কিমে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশে করা হয়েছে। প্রত্যেকের অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সংগঠিত হওয়া, সমষ্টিগতভাবে প্রতিনিধিত্ব করার ও অধিকার লঙ্ঘনে অভিযোগ জানানো, প্রতিকার ও ন্যায়বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে এই অধিকারসমূহ নিশ্চিত করতে দেশের সংবিধান, আইএলও কনভেনশন ও কর্মক্ষেত্রে মৌলিক নীতিমালা ও অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণা, শোভন কাজের মানদণ্ড এবং মানবাধিকার ও ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার আলোকে, যথাযথ ত্রিপক্ষীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে বর্তমান শ্রম আইনের সংস্কার অথবা একাধিক আইন প্রণয়ন করে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
এসএম/টিএ