আইন প্রণয়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে আরব আমিরাত

নতুন আইন তৈরি এবং পুরোনো আইন পর্যালোচনা ও সংশোধনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। বিশ্বে এই প্রথম কোনো দেশ সরাসরি আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় এআইকে সম্পৃক্ত করছে। এ উদ্যোগকে আমিরাতের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও প্রগতিশীল পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইউএই সরকার ইতোমধ্যে এই খাতে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো এ প্রকল্পকে ‘এআই-চালিত আইন প্রণয়ন’ নাম দিয়েছে। যেখানে অন্য দেশগুলো সরকার পরিচালনায় এআইকে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করছে, সেখানে আমিরাত আইন প্রণয়নের মতো স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কাজে এআইকে অংশীদার করার পরিকল্পনা করছে।

দুবাইয়ের শাসক ও দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম বলেছেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত এই নতুন আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া আমাদেরকে আরও দ্রুত, সুনির্দিষ্ট ও কার্যকরভাবে আইন তৈরি করতে সহায়তা করবে।”

এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে মন্ত্রিসভা সম্প্রতি ‘রেগুলেটরি ইন্টেলিজেন্স অফিস’ নামের একটি বিশেষ সংস্থা গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। সংস্থাটি এআই-ভিত্তিক আইন প্রণয়নের বিষয়টি তদারকি করবে।

আইন প্রণয়ন ব্যবস্থায় এআইকে কার্যকরভাবে যুক্ত করতে দেশটি একটি বিশাল তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলছে। এতে থাকবে ফেডারেল ও স্থানীয় আইন, আদালতের রায় এবং সরকারি সেবার বিস্তারিত তথ্য। এর মাধ্যমে এআই বিশ্লেষণ করে নিয়মিত আইন সংস্কারের পরামর্শ দিতে পারবে।

শেখ মোহাম্মদ আশা প্রকাশ করে বলেন, “এআই ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া ৭০ শতাংশ পর্যন্ত দ্রুততর হবে।”

তবে বিশেষজ্ঞরা এই উদ্যোগকে যেমন যুগান্তকারী হিসেবে দেখছেন, তেমনি সতর্কতাও জানিয়েছেন। কোপেনহেগেন বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক রনি মেডাগলিয়া একে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার মতে, এই উদ্যোগে এআইকে সহ-আইনপ্রণেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে।

অন্যদিকে গবেষকরা বলছেন, প্রশিক্ষণ ডেটায় পক্ষপাত থাকতে পারে, ব্যাখ্যাগত দুর্বলতা দেখা দিতে পারে এবং ভুল তথ্য দেওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়। এজন্য এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও মানবিক তদারকির ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এফপি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কোনো হুঙ্কারেই নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার ক্ষমতা কারো নেই: ডা. জাহিদ Sep 16, 2025
img
রাজস্ব ফাঁকি ২৫ কোটি : অতিরিক্ত সচিবসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা Sep 16, 2025
img
টেইলর সুইফট কে প্রপোজ করার সময় বেশ চিন্তিত ছিলেন ট্র্যাভিস কেলসি Sep 16, 2025
img
উপদেষ্টা নূরজাহান আপার ক্যান্সার, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার বিষয় মানবিক: আসিফ Sep 16, 2025
img
জামিন মেলেনি সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের Sep 16, 2025
img
দ্রুত কমছে স্থলভাগের তেল-গ্যাস মজুত, সতর্কবার্তা জাতিসংঘের Sep 16, 2025
img
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেলো বাংলাদেশের ৩৭ প্রতিষ্ঠান Sep 16, 2025
img
ঐশ্বরিয়া-অভিষেকের পর এবার আদালতে করণ জোহর Sep 16, 2025
img
মারা গেছেন ‘সোহরাব রুস্তম’ সিনেমায় নায়িকা বনশ্রী Sep 16, 2025
img
রেকর্ড ভেঙে মালায়ালম সিনেমার শীর্ষে লোকাহ Sep 16, 2025
img
বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হল এনসিএল Sep 16, 2025
img
অকপট স্বীকারোক্তিতে আলোচনায় রুকমিনি বসন্ত! Sep 16, 2025
img
পিসিবির দাবি প্রত্যাখ্যান করল আইসিসি Sep 16, 2025
img

জেরায় মাহমুদুর রহমান

যোগ্যতা দেখে কারো পদোন্নতি দেননি শেখ হাসিনা Sep 16, 2025
img
ভূতের চরিত্রে রাশমিকা, কাঞ্চনা ৪-এ নতুন চমক! Sep 16, 2025
img
ঘোষণা দিয়ে ৩২ নম্বর ভাঙার অধিকার আপনার নেই : মাসুদ কামাল Sep 16, 2025
img
বিয়ে নয়, এখন শুধু সিনেমায় ব্যস্ত জাহ্নবী Sep 16, 2025
img
রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ১৩ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
আমি ভয় পাওয়ার মানুষ নই : পরেশ রাওয়াল Sep 16, 2025
img
যুবদলের এক নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার Sep 16, 2025