ডেনমার্ক থেকে জার্মানি পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে রেকর্ড-ব্রেকিং টানেল

ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক এবং জার্মানির মধ্যে একটি রেকর্ড-ব্রেকিং টানেল তৈরি করা হচ্ছে। বাল্টিক সাগরের তলদেশে তৈরি হতে যাওয়া এই টানেলটি ভ্রমণের সময় কমিয়ে দেবে এবং ইউরোপের বাকি অংশের সাথে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশটির যোগাযোগও উন্নত করবে।

১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) দীর্ঘ, ফেমার্নবেল্ট টানেলটি হবে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড সড়ক ও রেল সুড়ঙ্গ। বুধবার (২৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মূলত ডেনমার্ক ও জার্মানির মধ্যে বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে যে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ফেমার্নবেল্ট টানেল নির্মাণ হচ্ছে, তা বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড সড়ক ও রেল টানেল হবে।
এই টানেল নির্মাণের ফলে স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং ইউরোপের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে যোগাযোগ অনেক সহজ ও দ্রুত হবে। কারে মাত্র ১০ মিনিট আর রেলে ৭ মিনিটেই ডেনমার্কের রডবিহ্যাভন থেকে জার্মানির পুটগার্টেনে পৌঁছানো যাবে—যেখানে আগে ফেরি পারাপারে ৪৫ মিনিট সময় লাগতো।

পানির নিচের অধিকাংশ টানেলের মতো মাটির নিচে বোরিং করে বানানো হচ্ছে না এটি। বরং ৯০টি বিশাল টানেল “এলিমেন্ট” তৈরি করে, সাগরের তলদেশে লেগো ইটের মতো করে জোড়া লাগানো হচ্ছে। প্রতিটি অংশের দৈর্ঘ্য ২১৭ মিটার, প্রস্থ ৪২ মিটার ও ওজন ৭৩ হাজার টনের বেশি।

এই অংশগুলো ডেনমার্কের লোল্যান্ড দ্বীপের উপকূলে নির্মিত একটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে। তারপর এগুলো সমুদ্রে ভাসিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে নামিয়ে বসানো হচ্ছে।

বিবিসি বলছে, এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ৭.৪ বিলিয়ন ইউরো। এর বেশিরভাগ অর্থ দিচ্ছে ডেনমার্ক সরকার, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনও ১.৩ বিলিয়ন ইউরো দিচ্ছে। প্রকল্পটি ২০২৯ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

মূলত প্রথমে একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু খোলা সমুদ্রের প্রবল বাতাস ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তা বাদ দেওয়া হয়। এছাড়া পরিবেশবিদদের একটি অংশ বিরোধিতা করেছিল। কারণ তারা বলেছিল, এই অঞ্চলের ডলফিন প্রজাতির জন্য শব্দদূষণ ও পরিবেশগত প্রভাব মারাত্মক হতে পারে।

ডেনমার্কের লোল্যান্ড দ্বীপ একসময় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা এলাকা ছিল। স্থানীয়দের আশা, এই টানেল নতুন ব্যবসা, কর্মসংস্থান ও পর্যটন বাড়াবে।

এছাড়া চালু হওয়ার পর প্রতিদিন টানেলটি দিয়ে ১২ হাজার গাড়ি ও ১০০টির বেশি ট্রেন চলবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রাজস্ব থেকেই ধীরে ধীরে প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণ শোধ করা হবে। যা শোধ করতে প্রায় ৪০ বছর সময় লাগবে।

আরআর/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পুঁজিবাজারের মাঠ প্রস্তুত, বিনিয়োগে ভালো ফলের সুযোগ রয়েছে : বিএসইসি কমিশনার Jul 04, 2025
img
পিএসসি’র সংস্কার চেয়ে শাহবাগ ‘ব্লকেড’ Jul 04, 2025
img
অনুশীলনে নেই লিটন, ফিরেছেন রিশাদ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে Jul 04, 2025
img
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন বাণিজ্য সচিব Jul 04, 2025
img
ব্যাংকক থেকে মিষ্টি খুনসুটি শেয়ার করলেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা Jul 04, 2025
img
৬২ রান করেও তামিম বললেন, নিজের সেরাটা দিতে পারিনি Jul 04, 2025
দীপিকার অর্জনে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি Jul 04, 2025
হোটেলে হাঁটছিলাম, কেউ আমার দিকে ঘুরেও তাকাল না: অভিষেক Jul 04, 2025
চলতে পারে বরফে, উড়তে নয়—দেশে প্রথম হোমমেড ‘এয়ার স্লেজ’! Jul 04, 2025
“জুলাই শুধু এক দলের নয়!"যে কারণে সরে গেলেন উমামা ফাতেমা! Jul 04, 2025
৫৪ বছরে বহু ও ১৭ বছরও বহু রাজনীতি দেখেছেন কিন্তু মুক্তি দিয়েছে ছাত্র জনতা Jul 04, 2025
img
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশে পরিবর্তন, তদন্ত ছাড়া আর শাস্তি নয় Jul 04, 2025
img
ব্রাজিলে ২০২৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে দেখতে চান আফিদা Jul 04, 2025
img
শুটিংয়ের ফাঁকে রাজ-শুভশ্রীর লাক্সারি ট্রিপ Jul 04, 2025
img
টিভি ও সংবাদপত্রের কিছু কর্তা সরাসরি সহিংসতা উসকে দিয়েছিলেন: উপ-প্রেস সচিব Jul 04, 2025
img
সহ-অভিনেতাদের বলা হতো আমাকে এড়িয়ে চলতে: ফাতিমা সানা শেখ Jul 04, 2025
img
শুরুটা ভালো হলেও ব্যাটিং ধসে লঙ্কানদের বিপক্ষে পরাজয় বাংলাদেশের Jul 04, 2025
img
সাফল্য নয়, সংগ্রামই তৈরি করেছে ঋতুপর্ণাকে Jul 04, 2025
img
'সে তো আজও বোঝে না' - সোহম চক্রবর্তীর অচেনা রূপ ফার্স্ট লুকে! Jul 04, 2025
img
সাজিদ খানের সঙ্গে তিক্ত অভিজ্ঞতা প্রকাশ করলেন এষা Jul 04, 2025