দুর্যোগের সময়েও ইন্টারনেট সংযোগ সচল রাখার সক্ষমতা থাকায় স্টারলিংকের সেবা নিয়ে দেশে আগ্রহ বাড়ছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক সেবা চালুর জন্য করা আবেদন পর্যালোচনা শেষ করেছে বিটিআরসি। অনুমোদনের প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, শিগগিরই তা টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালে পাঠানো হবে। অনুমতি মিললেই ৯০ দিনের মধ্যে সেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে স্টারলিংক।
গত ৯ ও ১০ এপ্রিল ঢাকায় ইনভেস্টমেন্ট সামিটে, স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেটের পরীক্ষামূলক সেবা দেয় স্টারলিংক। মার্কিন মহাকাশ প্রযুক্তি কোম্পানি স্পেসএক্সের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি চূড়ান্তভাবে সেবা দেওয়া শুরু করলে, দেশের ইন্টারনেট সেবার ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
নন-জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটরের লাইসেন্স পেতে এই মাসের শুরুতেই আবেদন করে স্টারলিংক। অনুমতি পেলে গেটওয়ে স্থাপন করবে প্রতিষ্ঠানটি। এরপরই শুরু হবে বাণিজ্যিকভাবে সেবা। এরই মধ্যে স্টারলিংকের রিসেলার হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানিসহ বেশকয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) শাহ আহমেদুল কবির বলেন, ‘আমরা বিক্রি পর্যায়ের বিষয়টি নিয়ে অতটা ভাবছি না। যেহেতু প্রাথমিকভাবে আমাদের বলা হয়েছে এটি আমরা করতে পারব না, বি টু যে সেলটা সবদেশ সেটা নিজেরাই করে। আমরা ভাবছি করপোরেট ব্যবহার নিয়ে। করপোরেট ব্যবহারে এটার একটা ভালো চাহিদা থাকতে পারে।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, এই লাইসেন্সের আওতায় ইন্টারনেট ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক সেবা দিতে পারবে স্টারলিংক।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, ‘আইনগতভাবে ইন্টারসেপশনের একটা সুযোগ থাকবে। টেকনিক্যালি ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া, আমার মনে হয় টেকনোলজিক্যালি উত্তরোত্তর দুরূহ হয়ে উঠছে।’
এমদাদ উল বারী আরও বলেন, ‘যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশা করছি এই সপ্তাহের মধ্যে পূর্ব অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে পারব। পূর্ব অনুমোদন আসলে তারপর আমরা তাদের লাইসেন্স ফি বা আনুষঙ্গিক ফি জমা দিতে বলব।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টারলিংকের বড় গ্রাহক হবেন করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। এই সেবা থেকে বেশি উপকৃত হবে, দুর্গম এলাকায় অবস্থানকারীরা। দুর্যোগের সময়ও সচল থাকবে এই সেবা।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে চিন্তা করলে যাদের ভালো ইন্টারনেট সেবা আছে তারা স্টারলিংকের দিকে যাবে না। কাজেই আইএসপিআর যদি ভালো ইন্টারনেট সেবা দেয়, মানুষ যদি মোবাইলে ভালো ইন্টারনেট সুবিধা পায় তাহলে। তবে হ্যাঁ, অনেক ক্ষেত্রেই বিকল্প হিসেবে স্টারলিংক ব্যবহার করবে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে একটু দুর্গম এলাকার ক্ষেত্রে।’
দেশের ইন্টারনেট সেবার মান উন্নয়নে প্রতিযোগিতা বাড়াবে স্টারলিংক, এমন মন্তব্য বিশ্লেষকদের।
আরএম/টিএ