পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শোকবার্তা দেননি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এমনকি ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি শোকবার্তাও কিছুক্ষণের মধ্যেই মুছে ফেলা হয়। বিশ্লেষকদের মতে, গাজা যুদ্ধ নিয়ে পোপের অবস্থানের কারণেই এমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তেল আবিব।
মুছে ফেলা শোকবার্তায় লেখা ছিল, “আপনার আত্মা শান্তি পাক, পোপ ফ্রান্সিস। তার জীবন আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।” তবে বার্তাটি প্রত্যাহার নিয়ে সরকারি কোনো ব্যাখ্যা না দিলেও, দ্য জেরুজালেম পোস্ট দাবি করেছে, গাজা ইস্যুতে পোপের ‘ইসরায়েলবিরোধী’ মন্তব্যের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক শোকবার্তার নির্দেশনা ছিল না, এবং বার্তাটি ‘ভুলক্রমে’ প্রকাশিত হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, গত নভেম্বরে পোপ বলেছিলেন, “গাজায় যা হচ্ছে, তা কি গণহত্যা নয়?”—এই মন্তব্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনায় পরিণত হয়।
রোমের প্রধান র্যাবাইসহ অনেক ইসরায়েলি নেতাই পোপের অবস্থানে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাদের মতে, পোপের বক্তব্য একপাক্ষিক ও পক্ষপাতমূলক ছিল।
তবে নেতানিয়াহুর শোকবার্তা না দিলেও, ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ খ্রিস্টানদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পোপকে "বিশ্বাস, সহানুভূতি ও মানবতার প্রতীক" হিসেবে স্মরণ করেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েল ও ভ্যাটিকানের সম্পর্ক ইতিহাসজুড়ে জটিল হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা কিছুটা উন্নত হয়েছিল। তবে গাজার চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি ও পোপের মানবিক বার্তাগুলো এই সম্পর্ককে আবারো উত্তেজনার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী খ্রিস্টান সম্প্রদায় পোপের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে। অথচ ইসরায়েলের এমন দ্বিধান্বিত প্রতিক্রিয়া ধর্ম ও রাজনীতির জটিল ভারসাম্যের নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করছে।
এসএস/টিএ