তাওহিদ হৃদয়ের শাস্তি নিয়ে জলঘোলার যেন শেষ নেই। আম্পায়ারের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য যে শাস্তি তার এবারের মৌসুমে পাওয়ার কথা ছিল তা এখন আগামী বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
এতে করে সুপার লিগের বাকি দুই ম্যাচ মোহামেডানের হয়ে খেলতে বাধা নেই হৃদয়ের। তাই আগামীকাল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে টস করতে মাঠে নামছেন বাংলাদেশি ব্যাটারই।
অথচ, গতকাল ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিটনের (সিসিডিএম) টেকনিক্যাল কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানিয়েছিলেন, গাজীর বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে পারবেন না হৃদয়।
তবে ফাহিমের বলাটা যেহেতু মুখে তাই শাস্তিটা কার্যকর হয়নি। কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে হৃদয়কে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি সিসিডিএম।
মোহামেডানের অধিনায়কের শাস্তির নাটক নিয়েই আজ তামিম ইকবালের নেতৃত্ব একদল ক্রিকেটার বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান ফাহিম ও আম্পায়ার্স ও মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান।
হৃদয়ের শাস্তি স্থগিত হওয়ার বিষয়টা যে ক্রিকেটারদের চাপেই হয়েছে সেটা না বললেও আর চলে। গত ১২ এপ্রিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে এক ম্যাচের শাস্তি পান হৃদয়। সঙ্গে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচটিতে অসদাচরণের জন্য ৪ ডিমেরিট ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।
কিন্তু ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালে হৃদয়কে নতুন করে তিনটি ডিমেরিট পয়েন্ট ও ৮০ হাজার জরিমানা করা হয়। ফলে নিষেধাজ্ঞা বেড়ে দুই ম্যাচ হয়। কিন্তু এক ম্যাচ পরেই মাঠে নামেন তিনি। তা নিয়েই পরে বড় রকমের ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
হৃদয়ের শাস্তি কমানোয় সিসিডিএমের টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার এনামুল হক।
এমন সিদ্ধান্তে পরে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আর পরিচালনা করবেন না বলে বিসিবিকে চিঠি দেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতও। আইসিসির এলিট প্যানেলের একমাত্র বাংলাদেশি আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে নড়েচড়ে বসে বিসিবি। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে পরে আম্পায়ার্স বিভাগ জানায়, আগের শাস্তি অনুযায়ী হৃদয়কে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ভোগ করতেই হবে।
কিন্তু আজ ক্রিকেটার ও বিসিবির বৈঠকের পর সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। হৃদয়ের শাস্তির বিষয়ে বৈঠক শেষে তামিম বলেছেন, ‘তাওহিদ হৃদয়ের দুই ম্যাচের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তখন কেউ নিয়ে কোনো কথা বলেনি। কিছুদিন পর তার শাস্তি দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হয়েছে। বিসিবি এটা করেছে। তখনো আমরা কোনো কথা বলিনি। এক ম্যাচ শাস্তি ভোগ করার পর সে দুই ম্যাচ খেলল। তার মানে সে তার শাস্তি ভোগ করেছে। দুই ম্যাচ খেলার পর গতকাল আমরা শুনেছি তাকে আবার এক ম্যাচের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এটা কোন নিয়মে করা হয়েছে আমাদের জানা নেই। এটা হাস্যকর। বিসিবি তাকে খেলতে দিয়েছে, আবার কিভাবে শাস্তি দেয়।’
আরআর/টিএ