আমার বাংলাদেশ পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন ১৪শ শহীদের পরিবার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞায় পড়ে কি না, তা তাদেরকে গণআদালতে প্রমাণ করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে আবার নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ্িইউনূসকে লক্ষ করে তিনি বলেন, এই শহীদরা না থাকলে আপনি আজকে জেলে থাকতেন।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪ টায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ কর্তৃক আয়োজিত শহীদি সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জুলাই গণকবর জিয়ারত নিয়ে উপদেষ্টাদের কোনো উচ্চবাচ্য দেখা যাচ্ছে না। অনেক উপদেষ্টা আছেন, যাদের ৭১-এর চেতনা বিক্রি করতে দেখেছি। ১৪ ডিসেম্বরের শহীদদের কবর জিয়ারত করতে করতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছেন। কিন্তু রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে জুলাইয়ের ১১৪ শহীদের কবর জিয়ারতের সময় তারা ছিলেন না।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা, আপনাকে বলছি—এই শহীদরা না থাকলে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আজ জেলে থাকতেন। ছয়তলা ভবনে লিফট ছাড়া হাসিনা আপনাকে উঠাবসা করাতেন। সেই দিনের কথা ভুলে যাবেন না। আপনার মামলাগুলো আজ খারিজ হয়ে গেছে, কিন্তু এই খারিজের রাজনীতি হতো না, মামলা চলত। যাদের রক্তের কারণে আপনি বেকসুর খালাস, যাদের রক্তের কারণে আপনি আজ উপদেষ্টা, তাদের রক্তের বদলা যদি না নেন, আপনাকেও মানুষ আগামী দিনে ক্ষমা করবে না। বাঙালির চরিত্র বুঝতে হবে। তারা প্যারিস থেকে এনে নায়ক যেমন বানাতে পারে, তেমনি মীর জাফরের মতো খলনায়কও বানাতে পারে। রক্ত দেওয়া শহীদ পরিবারের ইতিহাস ভুলে যাবেন না।
তিনি আরও বলেন, গণতদন্ত কমিশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রশ্নের সমাধান করতে হবে। আমরা বিভিন্ন সময় বলেছি কী কী অপশন হতে পারে। প্রথম অপশন হচ্ছে—নাৎসি মডেলে আওয়ামী লীগ, চৌদ্দদল ও জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা।’ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যেহেতু আমাদের তিনটি নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করেছে, তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা না হলেও অন্তত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বঞ্চিত করতে হবে। কারণ, তারা জাতিকে নির্বাচন করতে দেয়নি, ভোট দিতে দেয়নি। যারা এমপি-মন্ত্রী হয়েছে, তারা সারাজীবন আর কখনও রাজনীতি করতে পারবে না।’ এসময় তিনি গণভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধকরণ এবং জুলাইয়ের শহীদদের বিচার (ফায়সালা) করার আহ্বান জানান।
এর আগে তিনি বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ২৪-ঘণ্টার গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার আর কোনো অধিকার থাকতে পারে না। চৌদ্দশত শহীদের রক্ত দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ লেখা হয়ে গেছে। সেই ভবিষ্যৎ কখনও কালি দিয়ে মুছে দিয়ে নতুন করে লেখার প্রয়োজন হবে না। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—আওয়ামী লীগ প্রশ্নে আমরা কীভাবে ডিল করব? এটাই সম্মিলিত সিদ্ধান্তের জায়গা। আমরা যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছি, তখন বারবার বলেছি চারটি গণতদন্ত কমিশন গঠন করার জন্য। ইনকিলাব মঞ্চ যাদের কথা বলছে, যাদের দাবি নিয়ে আজ হাজির হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিষয়ে আমি বলেছি।