কাশ্মীরের পহেলগামে ২৬ জনকে হত্যার ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে তীব্র কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে এবার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিল ইরান। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে এই প্রস্তাব দেন।
তিনি লেখেন, “ভারত ও পাকিস্তান ইরানের ভাতৃপ্রতীম প্রতিবেশী। আমাদের সম্পর্ক বহু শতাব্দীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক বন্ধনে গাঁথা। আমরা চাই এই সংকটময় সময়ে ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে বৃহত্তর বোঝাপড়ার মাধ্যমে উত্তেজনা হ্রাস করতে।” একইসঙ্গে তিনি জানান, দুই দেশের রাজধানীতে অবস্থিত ইরানি দূতাবাসের মাধ্যমে এই সংলাপের সুযোগ তৈরিতে আগ্রহী ইরান।
আরাগচি তাঁর বার্তায় পার্সিয়ান কবি সাদি শিরাজি-র একটি বিখ্যাত কবিতাও উদ্ধৃত করেন— “মানুষ একটি একক পরিবার। পরিবারের কেউ ব্যথিত হলে, অন্যদেরও অস্বস্তি হয়।” শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে এভাবেই মানবিক বার্তা দেন তিনি।
পাক-ভারত উত্তেজনার পটভূমি:
গত মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত এক জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরপরাধ ব্যক্তি নিহত হন। হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ করে ভারত। এর পরই নয়াদিল্লি সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, সব ধরনের পাক ভিসা বাতিল এবং আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিল এবং সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী ঘোষণা করেন— “সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও যেন পাকিস্তানে না যায়, তা নিশ্চিত করব।” তার জবাবে পাকিস্তান জানায়, “পানির প্রবাহ আটকানো যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে ধরা হবে।”
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ইরানের পক্ষ থেকে আসা এই শান্তির প্রস্তাবকে আন্তর্জাতিক মহল গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এখন দেখার, নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ ইরানের এই উদ্যোগকে কীভাবে গ্রহণ করে।
এসএস