কাশ্মীর সীমান্তে গত দুই দিন ধরে চলেছে ভারত ও পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে গুলি বিনিময়। জানা গেছে, ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয় এই সংঘর্ষ।
৭৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বিভক্ত করেছে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য এবং পাকিস্তানের কাশ্মীর অংশকে। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা যায়, ২৪ এপ্রিল মধ্যরাতে পাকিস্তানের দিক থেকে সীমান্ত এলাকায় ফাঁকা গুলি চালানো হয়। তার পাল্টা জবাবে গুলি ছোড়ে ভারতীয় সেনারাও।
তারপর থেকে এখন পর্যন্ত গুলি বিনিময় চলছে। তবে এতে এখন পর্যন্ত কেউ নিহত বা আহত হয়নি।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, তবে সেখানকার কোনো সেনা কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরণ উপত্যকায় পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ জঙ্গি হামলা ঘটে। এতে নিহত হন ২৫ জন ভারতীয় এবং ১ জন নেপালি পর্যটক। নিহতদের সবাই পুরুষ।
হামলার দায় স্বীকার করে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। ভারতের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, কাশ্মীরের বৃহত্তম বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বা’র (এলইটি) একটি উপশাখা এই টিআরএফ। প্রসঙ্গত, লস্কর-ই তৈয়বার সঙ্গে এক সময় পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে গভীর আঁতাত ছিল।
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘গলার ধমনী’ বলে উল্লেখ করে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির বলেছিলেন, পুরো জম্মু ও কাশ্মীর অবশ্যই একদিন পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হবে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই হামলা ঘটল পেহেলগামে।
ভয়াবহ এই হামলার পর জঙ্গিদের ধরতে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে ভারত, সেই সঙ্গে সিন্ধু নদের পানিচুক্তি স্থগিত, সব পাকিস্তানি নাগরিকের ভিসা বাতিলসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি।
ইসলামাবাদও অবশ্য নিষ্ক্রিয় নেই। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ওয়াঘা সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা, শিখ ধর্মাবলম্বী ব্যতীত সব ভারতীয়র ভিসা বাতিল করা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা স্থগিত করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ইসলামাবাদ।
আরএ/এসএন