আইএমএফের ঋণ বাংলাদেশের জন্য জরুরি নয়

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান আলোচনা থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আইএমএফ ঋণ গ্রহণ খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ওয়াশিংটনে আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা এখনো চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাইনি, তবে অবস্থান খুব একটা দূরে নয়। যদি সমঝোতা না-ও হয়, বাংলাদেশে কোনো বড় সমস্যা হবে না, আমাদের অর্থনীতি স্বাভাবিকভাবেই চলবে।”

এ সাক্ষাৎকারের বিবরণ বাংলাদেশের মিশনের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা শনিবার সকালে তার ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করেন।

গভর্নর মনসুর বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাংকিং খাত ও বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সংস্কার প্রয়োজন। আইএমএফ কেবল এই প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তার ভাষায়, “যদি মনে করি ঋণ আমাদের সহায়ক নয়, তবে আমরা নেব না।”

তিনি আরও বলেন, আইএমএফের ব্যালান্স অব পেমেন্ট সহায়তা না পেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোনো সমস্যা হবে না। “এটা কেবল একটি অতিরিক্ত সুবিধা, রিজার্ভ এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে,” বলেন তিনি।

আলোচনার মূল বিষয় প্রসঙ্গে গভর্নর জানান, আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা মূলত আর্থিক খাত ও কর ব্যবস্থার সংস্কার ঘিরে। অর্থাৎ, ঋণ নয়, বরং টেকসই সংস্কারই উদ্দেশ্য।

তিনি জানান, রাজস্ব আদায়ে সমঝোতা হয়েছে, তবে মুদ্রা বিনিময় হার বিষয়ে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। বর্তমানে বাজার স্থিতিশীল এবং ডলার বিক্রির প্রয়োজন হচ্ছে না বলেও জানান গভর্নর মনসুর।

বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে গভর্নর বলেন, “আমরা শ্রীলঙ্কা হইনি, পাকিস্তানও হইনি। আমাদের এখন কোনো চাপে পড়ে ঋণ নিতে হচ্ছে না।”

পূর্ববর্তী সরকারের আমলে প্রায় ২৪-২৫ বিলিয়ন ডলার পাচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কয়েক বিলিয়ন ডলারের সহায়তা পেলেও সেটি খুব বড় বিষয় নয়, সংস্কারই আসল চাবিকাঠি।”

অন্যান্য দাতা সংস্থার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে সাধারণত অতিরিক্ত কোনো শর্ত থাকে না, তবে বাজেট সহায়তা ঋণের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে। বাকি ২৩৯ কোটি ডলার ছাড়ের জন্য আলোচনা চলছে।


এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ Dec 15, 2025
img
পুলিশের পোশাকে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় বক্তব্য দেওয়ায় এএসআই বরখাস্ত Dec 15, 2025
img
ডিসেম্বরের ১৩ দিনেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি দেশের ১০ ব্যাংকে Dec 15, 2025
img
কলম্বিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ১৭ জনের, আহত ২০ Dec 15, 2025
img
স্বর্ণ কিনবেন? জেনে নিন আজকের বাজারদর Dec 15, 2025
img
৩ দাবিতে আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা ডাকসুর Dec 15, 2025
img
রাজধানী ঢাকায় কমবে দিনের তাপমাত্রা Dec 15, 2025
img
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি, কমেছে দাম Dec 15, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুক হামলার ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে ১৬ Dec 15, 2025
img

চানখারপুলে ছয় হত্যা

হাবিবুর রহমানসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু আজ Dec 15, 2025
img
ওসমান হাদির ঘটনায় মেহেরপুর সীমান্তে বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার Dec 15, 2025
img
এমবাপে ও রদ্রিগোর গোলে আলাভেসের বিপক্ষে স্বস্তির জয় রিয়াল মাদ্রিদের Dec 15, 2025
img
এলাকার উন্নয়নে ঐক্যের আহ্বান হাবিবুর রশিদ হাবিবের Dec 15, 2025
img
শব্দদূষণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে: রিজওয়ানা হাসান Dec 15, 2025
img

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

হলান্ডের জোড়া গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে বড় ব্যবধানেই হারাল ম্যানচেস্টার সিটি Dec 15, 2025
img
আজ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হবে সিঙ্গাপুর Dec 15, 2025
img
১৫ ডিসেম্বর: ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা Dec 15, 2025
img

বুন্ডেসলিগা

টেবিলের তলানির দলের বিপক্ষে কোনোমতে হার এড়াল বায়ার্ন মিউনিখ Dec 15, 2025
img
ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রবাসীদের দেশ গড়ায় অবদান রাখার আহ্বান Dec 15, 2025
img
সিডনির ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন মুসলিম ফল ব্যবসায়ী Dec 15, 2025