জম্মু ও কাশ্মিরে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা লাভ করেছে এবং এই পরিস্থিতি সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। বিশেষ করে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতির কথা শোনা যাচ্ছে, যদিও আন্তর্জাতিক চাপ এবং কূটনৈতিক উদ্যোগও তীব্র হয়ে উঠেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন চেয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারত এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের যুক্তি তৈরি করতে চায়। গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে মোদি সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো ধ্বংস করার এবং "কঠোর শাস্তি" দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এদিকে, পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, বিশেষ করে কাশ্মির সীমান্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাগুলি অব্যাহত রেখেছে। ভারতের এই সামরিক প্রস্তুতির পর পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংকট সমাধানের জন্য সংযম ও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে, তবে আন্তর্জাতিক চাপ অনেকটাই সীমিত মনে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, তবে তাদের কতটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, ভারত ও পাকিস্তান—দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশ হওয়ায়, সামরিক সংঘাতের পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। যদিও উভয় দেশই সংঘাত নিয়ন্ত্রণের পক্ষপাতী, তবে উত্তেজনা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
এসএস/এসএন
এছাড়া, হামলার পাঁচ দিন পরও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম ঘোষণা করেনি, এবং পাকিস্তান সরকারও হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু ভারতীয় কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তারা কিছু প্রযুক্তিগত প্রমাণ পেয়েছেন যা হামলাকারীদের পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগ দেখায়।
সবমিলিয়ে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এবং বিশ্বের কূটনীতিকরা একে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি হিসেবে দেখছেন।