চোখের মেকআপ ও কনট্যাক্ট লেন্স আজকাল মহিলাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। তবে এই মেকআপ ও লেন্সের আড়ালে কি লুকিয়ে রয়েছে আপনার চোখের জন্য বড় কোনো বিপদ? এই বিষয়ে এইচটি লাইফস্টাইল-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, ডা ভেঙ্কটেশ বাবু এস, পরামর্শদাতা চক্ষু বিশেষজ্ঞ, ডঃ আগরওয়ালস আই হসপিটাল, বেঙ্গালুরু বলেন, "যদি সঠিক যত্ন নেওয়া না হয়, তাহলে মেকআপ ও লেন্সের অপব্যবহার বা অতিরিক্ত ব্যবহার চোখের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে লেন্স ও কাজলের মতো কিছু মেকআপ ব্যবহার করার সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকা প্রয়োজন।"
জ্বালা: মেকআপের সঠিক প্রয়োগ ও অপসারণ না হলে সংক্রমণ ও জ্বালার সম্ভাবনা থাকে।
মেয়াদোত্তীর্ণ বা অপরিষ্কার মেকআপ: মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী, অন্যের সাথে মেকআপ শেয়ার করা, বা অপরিষ্কার ব্রাশ ব্যবহারের ফলে সংক্রমণ হতে পারে।
সংবেদনশীল চোখের জন্য ঝুঁকি: কিছু মেকআপের উপাদান, যেমন সংরক্ষক ও সুগন্ধি, সংবেদনশীল চোখের জন্য প্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে।
অশ্রুনালী বন্ধ হওয়া: আইলাইনার জলরেখার উপর প্রয়োগ করলে অশ্রুনালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে, ফলে চোখে জল পড়া, জ্বালা ও সংক্রমণ হতে পারে।
কর্নিয়ার ক্ষত: মাসকারা বা পেন্সিল আইলাইনার ব্যবহারের সময় দুর্ঘটনাক্রমে চোখে আঘাত লেগে কর্নিয়ায় আঁচড় পড়তে পারে, যা ব্যথা ও চোখ লাল হওয়ার কারণ হতে পারে।
শুষ্ক চোখ: চোখের মধ্যে ঢুকে পড়া গ্লিটার বা পাউডার অশ্রু স্তর ব্যাহত করে শুষ্কতার সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া, ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ তুলতে কঠিন এবং এতে কঠোর রাসায়নিক থাকতে পারে।
কনট্যাক্ট লেন্সের অপব্যবহারের ঝুঁকি: ডঃ ভেঙ্কটেশ বাবু এস বলেন, "চশমার বিকল্প হিসাবে কনট্যাক্ট লেন্স সুবিধাজনক, বিশেষত যারা সার্জারি বা চশমা এড়াতে চান তাদের জন্য। তবে এগুলিরও কিছু নিজস্ব ঝুঁকি রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের বেশি লেন্স ব্যবহার করা বা সঠিক পরিষ্কার না করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।"
সংক্রমণ: অপর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা ও লেন্স পরে ঘুমানোর কারণে চোখে সংক্রমণ হতে পারে।
চোখ লাল হওয়া: লেন্সের ভুল ফিটিং বা অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণে চোখ লাল ও জ্বালাপোড়া হতে পারে।
কর্নিয়াল আলসার: দীর্ঘ সময় ধরে লেন্স পরার ফলে কর্নিয়াল আলসার হতে পারে, যা গুরুতর সমস্যা।
শুষ্ক চোখ: লেন্স চোখের পৃষ্ঠে অক্সিজেন প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে, ফলে সময়ের সাথে চোখ শুষ্ক ও জ্বালাপোড়া অনুভব করতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ:
হাইপোঅ্যালার্জেনিক প্রসাধনী ব্যবহার করুন এবং প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর তা পরিবর্তন করুন।
মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ ব্যবহার করবেন না এবং অন্যের সঙ্গে মেকআপ শেয়ার এড়িয়ে চলুন।
মেকআপ করার আগে কনট্যাক্ট লেন্স পরুন এবং মেকআপ তুলার আগে লেন্স খুলে ফেলুন।লেন্স ব্যবহার বা চোখের চারপাশে কিছু প্রয়োগের আগে সঠিকভাবে হাত পরিষ্কার করুন।নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করান যাতে যে কোনও সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে।মেকআপ বা কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবকিছুতেই পরিচ্ছন্নতা, সচেতনতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করা অপরিসীম।
এসএন