২০১৪ সালে প্রেম করে বিয়ের পর চার বছরের মাথায় ভারতীয় তারকার পেসার মোহাম্মদ শামি ও মডেল হাসিন জাহানের সংসারে ভাঙন ধরে। এরপর থেকেই দীর্ঘ সময় ধরে তাদের বিচ্ছেদের মামলা চলছে। সেই মামলায় স্ত্রী হাসিন ও একমাত্র মেয়ে আয়রাকে ১.৩ লাখ রুপি করে মাসে ভরণপোষণের আদেশ দেন আলিপুর জেলা আদালত। সেটি মানতে না পেরে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন হাসিন, অবশেষে সেই রায় এসেছে।
কলকাতার উচ্চ আদালত শামিকে মাসে স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ ৪ লাখ রুপি করে খরচ বহনের নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫ লাখ ৭২ হাজার টাকারও বেশি। এর মধ্যে স্ত্রীকে দেড় লাখ এবং সন্তানের জন্য আরও আড়াই লাখ রুপি দিতে হবে। অর্থাৎ, জেলা আদালতের দেওয়া রায়ের চেয়ে আরও বড় অঙ্কের অর্থ গুনতে হচ্ছে শামিকে।
হাসিন জাহানের মামলার আবেদনের ভিত্তিতে গতকাল (মঙ্গলবার) এই রায় দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়। যদিও ৭ বছর আগে ‘প্রোটেকশন অব উইমেন ফ্রম ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট-২০০৫’ অনুসারে মামলা দায়েরের পর আইনি খরচ এবং ভরণপোষণ বাবদ ১০ লাখ রুপি চেয়েছিলেন শামির স্ত্রী। কিন্তু নিম্ন আদালতে সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। আলিপুর আদালত শুধুমাত্র সন্তানকে ৮০,০০০ রুপি প্রতি মাসে দেওয়ার নির্দেশ দেন শামিকে। পরে জেলা জজ সেই নির্দেশ সংশোধন করে হাসিন জাহানকেও মাসে ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সবমিলিয়ে অঙ্কটা দাঁড়ায় ১.৩ লাখ রুপিতে।
ওই সময় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়া হাসিনের আইনজীবী জানান, মাসে হাসিন জাহানের আয় ১৬ হাজার রুপি। ব্যাংকে স্থায়ী আমানত থেকে সুদ বাবদ তিনি এই টাকা পান। এই টাকায় তার এবং কন্যার খরচ চালানো সম্ভব নয়। শামির সঙ্গে থাকার সময় থেকে তারা ব্যয়বহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে তার প্রতি মাসে খরচ হয় প্রায় ৬ লাখ রুপি। অন্যদিকে, তার সাবেক স্বামীর ২০২০-২১ অর্থবছরের আয় প্রায় ৭.১৯ কোটি রুপি। সামর্থ্য থাকতেও তিনি টাকা দিতে চাইছেন না।
এর জবাবে শামি আদালতকে জানান, তার সাবেক স্ত্রী একজন সফল মডেল এবং অভিনেত্রী। বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন তিনি। ফলে তার মাসিক আয় অন্তত ৫ লাখ রুপি। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে তার বেশ কিছু আমানত রয়েছে। একইসঙ্গে সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগও করেন শামি।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে হাসিন জাহান টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘গত সাত বছর ধরে আমি নিজের অধিকার পাওয়ার লক্ষ্যে লড়তে গিয়ে প্রায় সব হারিয়েছি। সে কারণে আমার সন্তানকেও ভালো স্কুলে ভর্তি করাতে পারিনি। এখন আদালতের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
একই প্রতিবেদনে বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের বরাতে বলা হয়েছে, ‘এটি সত্য যে, অতিরিক্ত পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্ন আসে না, আবার খুব অল্প ভরণপোষণ ব্যয়ও গ্রহণযোগ্য নয়।’
এসএন