ইউক্রেন যুদ্ধ: রাশিয়ায় সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করল উত্তর কোরিয়া

প্রথমবারের মতো ইউক্রেন যুদ্ধের ময়দানে সরাসরি সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করেছে উত্তর কোরিয়া। ১৯৫০-৫৩ সালের কোরিয়া যুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো সশস্ত্র সংঘাতে অংশ নিল পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে গত বছরই তারা সেনা পাঠিয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করেছিল, শীত আসার আগে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ায় প্রায় ১০-১২ হাজার সেনা মোতায়েন করে। এতদিন এ বিষয়ে মুখ না খুললেও এবার আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি দিল পিয়ংইয়ং।

দুদিন আগে রাশিয়া জানিয়েছিল, তারা কুরস্ক অঞ্চল পুনরুদ্ধার করেছে। আর এর পরপরই উত্তর কোরিয়া জানায়, তাদের সেনারা এই অভিযানে সহায়তা করেছে। যদিও ইউক্রেন রাশিয়ার এই দাবিকে স্বীকার করেনি।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়, রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তির আওতায় এই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গত ২০২৪ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে একটি সুরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার শর্ত অনুযায়ী কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে অপর দেশ সামরিক সহায়তা প্রদান করবে। বিশেষজ্ঞরা একে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক চুক্তি বলে মনে করছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "ইউক্রেনীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করার জন্য রাশিয়াকে সহায়তা করেছে উত্তর কোরিয়ার সেনারা।" কিম জং উন বলেন, "ন্যায়বিচার ও মাতৃভূমির সম্মান রক্ষায় যারা জীবন উৎসর্গ করেন, তারা জাতির বীর।" নিহত সেনাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ংয়ে একটি সৌধ নির্মাণের ঘোষণাও দেন তিনি। নিহতদের পরিবারকেও সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।

তবে উত্তর কোরিয়া এখনও পর্যন্ত কত সেনা পাঠানো হয়েছে বা কতজন নিহত হয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা রাশিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে এবং পরবর্তীতে আরও তিন হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সেনারা প্রশিক্ষিত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হলেও, ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের মতো অপরিচিত অঞ্চলে যুদ্ধের অভিজ্ঞতার অভাবের কারণেই তাদের এত বেশি প্রাণহানি ঘটছে।

এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এনআইডি কীভাবে পাবেন, কারা পাবেন? Jul 09, 2025
img
দেশের প্রতিটা সেক্টরে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে : নিলুফার চৌধুরী মনি Jul 09, 2025
img
ক্যানসারকে জয় করে অভিনয়ে ফিরতে চান দীপিকা Jul 09, 2025
img
অভিনেত্রী রাশমিকাকে ফলো করেন না বিজয় দেবেরাকোন্ডা! Jul 09, 2025
img
‘শাকিবের মত বড় শিল্পীর সাথেই আমার প্রথম সিনেমার পথচলা শুরু’ Jul 09, 2025
img
পঞ্চায়েত সিজন ৪: মাত্র দুই সপ্তাহেই পেয়েছে ১৬.৬ মিলিয়ন ভিউ! Jul 09, 2025
গুরুত্বপূর্ণ ৩টি শিক্ষা | ইসলামিক জ্ঞান Jul 09, 2025
img
জম্বি থেকে প্রেম, থ্রিল থেকে সংগ্রাম, এই সপ্তাহের ওটিটি রিলিজে সব আছে Jul 09, 2025
img
শেখ হাসিনাকে গণহত্যার জন্য অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: প্রেস সচিব Jul 09, 2025
img
ফেনীতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি Jul 09, 2025
img
চোট নিয়ে শুটিং, শেষমেশ হাসপাতালে ফাহিম মির্জা Jul 09, 2025
img
ঢাকাসহ দেশের ৪ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস Jul 09, 2025
img
আলিয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে ৭৬ লক্ষ টাকা আত্মসাত, গ্রেফতার প্রাক্তন সহকারী Jul 09, 2025
img
জাপান ও ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা পেল বাংলাদেশি নির্মাতার ছবি Jul 09, 2025
img
কক্সবাজার সৈকতে ভেসে এলো আরেক চবি ছাত্রের মরদেহ Jul 09, 2025
img
শৈশবের ক্লাব ফ্লুমিনেন্সকে বিদায় করে পেদ্রো বললেন, ‘তাদের জন্য খারাপ লাগছে’ Jul 09, 2025
img
বিএসএফের গুলিতে নিহত ইব্রাহিমের মরদেহ ৭ দিন পর ফেরত দিল ভারত Jul 09, 2025
img
গতানুগতিক রাজনীতি নয়, বিএনপিকে দেশ বাঁচানোর রাজনীতি করতে হবে : ব্যারিস্টার শামীম হায়দার Jul 09, 2025
img
সততা-দক্ষতার সঙ্গে কাজ করলে কোনো ভয় নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান Jul 09, 2025
img
দুর্ঘটনার শিকার ওয়েলস নারী ফুটবল দল Jul 09, 2025