আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করতে গেজেট নোটিফিকেশনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) আমাদের মতামতের জন্য অপেক্ষা করেনি। ওনারা নিজেরা গেজেট নোটিফিকেশন করেছেন। এখানে আমার বলার কিছু নাই।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করার পর গেজেট হবে কি না, সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল— এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ইশরাক হোসেনের গেজেট নোটিফিকেশন হবে কিনা, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল। নির্বাচন কমিশনতো আসলে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, আমাদের মতামত জানার প্রয়োজন ছিল না। এজন্য তাদের সিদ্ধান্ত তাদেরই নেওয়ার কথা। আমাদের কাছে যখন মতামত নিতে পাঠিয়েছিলেন তখন আমরা সংশ্লিষ্ট আইন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। এতে আমরা জানতে পেরেছি নির্বাচনী যে প্লেইন্ড আছে সেটা নাকি পরিবর্তন করা যায় না। কারণ সেখানে নাকি হাইকোর্টের রায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ইশরাক সাহেব নাকি পরবর্তী সময়ে প্লেইন্ড পরিবর্তন করেছিলেন। সেজন্য আমরা দ্বিধান্বিত ছিলাম এটা কি গেজেট নোটিফিকেশন হবে নাকি আপিল করতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশন আমাদের মতামতের জন্য অপেক্ষা করেনি। ওনারা নিজেরা গেজেট নোটিফিকেশন করেছেন। এখানে আমার বলার কিছু নাই।
অনেকে বলেছেন, এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আমলের নির্বাচনকে লিগ্যালাইজ করা হলো— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই। এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। এভাবে যারা মামলা করে বা প্লেইন্ড পরিবর্তন করে বিজয়ী হতে চাচ্ছে এটা তাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন।
ইরেশ জাকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, এ মামলাগুলো বাণিজ্যিক বা বিদ্বেষমূলক কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের আইনে কোথাও মামলা করার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয় নাই। যে যার মতো করে মামলা করতে পারে। এখানে অনেক হয়রানিমূলক, বিদ্বেষমূলক মামলা হচ্ছে। অন্যের জায়গা জমি দখল, ব্যবসা দখলের জন্য মামলা হচ্ছে। এগুলো অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। মামলা হওয়ার পর আমরা পুলিশ প্রশাসন ও আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকার দেওয়ার প্রচেষ্টা করছি। এখন এতো মামলা হচ্ছে, এতে আমাদের জন্য কাজ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, মামলা করতে আমরা কাউকে বাধা দিতে পারি না, তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বার বার বলা হচ্ছে অভিযোগের সুনির্দিষ্টতা পাওয়া না গেলে কাউকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়। আমরাও আদলতের মাধ্যমে আইনগত প্রতিকার দেওয়াে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইরেশ জাকেরসহ কিছু কিছু মামলা হয়েছে। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো যারা মামলা করেছে তাদের খুঁজে বের করে সবার সামনে উন্মোচন করেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আরো কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে বিষয়ে সারাক্ষণ চিন্তা করছি। প্রয়োজনের আইনগত পরিবর্তন আনতে হলে চেষ্টা করবো।
এমআর/টিএ