'পুলিশকে গুলির নির্দেশদাতা কারা, এখনই বলা সম্ভব নয়'

ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে পুলিশকে গুলির নির্দেশদাতা কারা ছিলেন তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

তিনি বলেন, আন্দোলন দমনে পুলিশের কতজন কর্মকর্তা গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, প্রতিটা মামলার আমরা তদন্ত করছি। প্রতিটা মামলার তদন্তে ঘটনাগুলো কিন্তু উঠে আসছে। সবগুলো মামলা তদন্ত শেষ হলে তখন বলতে পারব কতজন লোক গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন, কতজন লোক গুলি করেছিলেন।

পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এসব কথা বলেন।

গণঅভ্যুত্থানের ১০ মাস পেরিয়ে গেছে। পুলিশের সংখ্যা এখন দুই লাখের বেশি বলে আমরা জানি। আন্দোলনের সময় কারা আসলে পুলিশকে গুলির নির্দেশ দিয়েছিল? দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম প্রেস কনফারেন্সে আপনি বলেছিলেন দায় নির্ধারণের কাজ চলছে। আসলে দায় মোট কতজনের। এই গণঅভ্যুত্থানে কতজন গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন?

জানতে চাইলে পুলিশপ্রধান বলেন, এটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না কারণ মামলা তো প্রায় পনেরোশ। এরমধ্যে হত্যা মামলাই আছে প্রায় ৬০০। প্রতিটা মামলা তদন্তেই তথ্য উপাত্ত আসছে। তদন্তের পুরো প্রক্রিয়ার শেষ না হলে আমরা আসলে তেমন কিছু বলতে পারছি না৷

গণমামলায় গণআসামি। যারা নির্দোষ আসামি তাদের জন্য পুলিশ কী ধরনের সাপোর্ট দেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, বাদীর বিরুদ্ধে কিন্তু আমরা কোর্টের কাছে অভিযোগ করতে পারি যে উনি মিথ্যা তথ্যে মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু সেটা তো হতে হবে আমার তদন্ত শেষ হওয়ার পরে। বাস্তব হলেও সত্য যে, ৮ মাস হলো কোনো হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত চলমান। তবে অন্যান্য ধারায় দায়ের করা মামলার যেটাতে আহতে অভিযোগ রয়েছে এরকম দুটি মামলা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

বাহারুল আলম বলেন, মামলা তদন্তের বিষয়ে তাড়াহুড়া নয়। এক মাসের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করে ফেলেন- এরকম করতে গেলে আসলে আল্টিমেটলি আমরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারব না। এই জায়গাটাতে মনে হয় আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। তবে ভুল বা মিথ্যাভাবে যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তাদের তো স্বাভাবিক জীবনযাপনে অসুবিধা নেই। তদন্তকারী পুলিশ তো জানে যে ওই ভদ্রলোক নির্দোষ আসামি। আমিতো তাকে কোনোভাবে হয়রানি বা গ্রেপ্তার করব না। পুলিশ যদি হয়রানি বা গ্রেপ্তার না করে তাহলে আর কে করতে পারে? যেটা হয় আমরা শুনেছি বাদীরা আসামিদের কাছ থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে সুবিধা চাইছেন। অনেকে নির্দোষ আসামি বলে, ভুল বুঝে বা না বুঝে আসামি করা হয়েছে বলে আদালতের নাম কাটার অ্যাফিডেভিট করছেন। এতে তদন্ত কাজে কিন্তু কোনো বাধা নেই। বাদী যতই বলুক মামলায় ওনার নাম আছে বা উনি নাই ওই সময় ওই কথা কোর্টে আর কার্যকরী হবে না। তদন্ত প্রতিবেদন যতক্ষণ পর্যন্ত না যাবে কোর্টে ততক্ষণ পর্যন্ত বাদীর এই ধরনের স্টেটম্যান আমাদের তদন্তে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না। কাজেই ভুল করে অনেকে কোর্টে যাচ্ছেন। এখানে আমরা কোনো আসামিকে প্রটেকশন দিতে পারছি না।

আইজিপি বলেন, আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে পারি এ ধরনের ভুল পথে কেউ যাবেন না। প্রতারিত হয়ে কেউ গিয়ে কাউকে টাকা পয়সা দেবেন না। যদি অসুবিধায় পড়েন পুলিশের কাছেই আসেন। পুলিশকে জানান আপনি জড়িত না। আপনাকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি। আমি নিজেও মাঝে মাঝে থানায় ফোন করে বলি এই লোকটা আমার কাছে আসছে তাকে কি ধরার জন্য চেষ্টা করছেন। আমরা আসলে এতটুকুই করতে পারছি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ও বিশেষ করে ৫ আগস্টের ঘটনায় যেসব পুলিশ কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ও পলাতক তাদের ফিরিয়ে আনা ও গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সর্বশেষ তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, মামলা তদন্তের পর্যায়ে এগিয়ে যখন কোনো এভিডেন্স আসে তখন আমরা দেশে থাকাদের গ্রেপ্তার চেষ্টা করি। যারা বাইরে পলাতক আছেন তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে একটা সুবিধা হচ্ছে ইন্টারপোলকে অনুরোধ করতে পারি। এটা আমরা ইতোমধ্যে করেছি। ইন্টারপোল সেটা সভ্য দেশগুলোতে সে আবেদন পাঠিয়েছে।

‘সারা দেশে মামলা হচ্ছে, রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের নামে মামলা হচ্ছে। নতুন করে গতকাল রোববার ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেক সময় আমরা আপনাদের মুখ থেকেও শুনি বেশিরভাগ মামলা মিথ্যা। একটি চক্র এই মিথ্যা মামলার নামে অর্থ বা টাকা পয়সা আদায় করছে ভয়-ভীতি দেখিয়ে।’

আইজিপি বলেন, আগে যেটা হতো, মামলা দায়ের হতো কারো মৌখিক অভিযোগের মাধ্যমে। মৌখিকভাবে বলার পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেটা পুনর্লিখন করতেন। সেখানে অভিযোগকারীর সই-স্বাক্ষর নিতেন। এটা পাকিস্তান আমলে হতো। এখন যেটা হয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অধিকাংশ অভিযোগকারী নিজের হাতে অভিযোগ লিখে নিয়ে আসেন। বাদী যখন অভিযোগ নিয়ে আসেন তখন আমরা আইনের বাইরে যেতে পারি না। অভিযোগ সত্য নাকি মিথ্যা সেটা যাচাই করার সুযোগ নেই। অভিযোগকারী যে অভিযোগটা দেন এক্সাক্টলি সেটাই আমাদের মামলা হিসেবে নিয়ে নিতে হয়। এরপর তদন্তে গিয়ে আমরা দেখি যে কতটুকু সত্য কতটুকু মিথ্যা। সত্যটুকুই আমরা তুলে ধরে আদালতে পাঠাই।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে দেখা গেছে, অনেকে অসৎ উদ্দেশ্যে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার জন্য হয়রানির ভয় দেখানোর জন্য অপরাধটা হয়ত করেছে।

তিনি বলেন, আমরা সবাইকে নিশ্চিত করতে চাই যে, শুরু থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমি নিজেও বলেছি, সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই নির্দেশ পেয়েছেন যে, নিরীহ কোনো লোককে গ্রেপ্তার যেন করা না হয়। তদন্তে শুধু যার বিরুদ্ধে দায় পাওয়া যাবে তার বেলাতেই আমরা ওয়ারেন্ট চাইবো। এবং তাকেই শুধু আমরা গ্রেপ্তার করব।

পুলিশ প্রধান বলেন, মামলা আসলে মিথ্যা না। মামলাটা সত্যই, কিন্তু মামলায় আসামির সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার জায়গাটা আমরা বন্ধ করতে পারছি না। আইনে এখানে আমাদের পুলিশের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

অতীতে আমরা পুলিশকে পেটুয়া বাহিনী হিসেবে দেখেছি। ৫ আগস্টের পরে আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুলিশ ও নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু আগামীতে রাজনৈতিক সরকারের সময়ে পুলিশ যে আবার একই চরিত্রে ফিরে যাবে না এটা নিশ্চিত করার উপায় কি? জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, দেশতো আসলে রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদরাই চালাবেন। তারা নিশ্চয়ই সবচেয়ে বেশি বোদ্ধা। দেশের কল্যাণ ও মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নেতৃত্ব ওনারাই দেন। আমরা তো তাদের নেতৃত্বের ওপরেই আস্থা রাখি। আমরা বরাবরই বলে আসছি যে অনেক দেশে আছে যে পুলিশে ফাংশনাল অংশটুকু যেমন গ্রেপ্তার ক্ষমতা কোনো একটা স্বতন্ত্র বডিতে দেওয়া থাকে। এটা ফাংশন করার জন্য স্বতন্ত্র পুলিশ কমিশন পালন করে। আর যেটা প্রশাসনিক অংশ যেমন- উন্নতি, পদোন্নতি, স্যালারি এগুলো মন্ত্রণালয় বা সরাসরি এক্সেকিউটিভের নিয়ন্ত্রণে থাকে।

যারা জীবন বাজি রেখে পুলিশের স্থাপনা ও সম্পদ রক্ষা করেছেন তাদের কাউকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি আছে। যাদের আমরা পদক দিচ্ছি তারা নিজের কাজের কৃতিত্বের অংশটুকু লিখে পাঠান আমাদের কাছে। কারণ আমাদের পক্ষে প্রত্যেকটা কেস ধরে ধরে জেনে রাখা সম্ভব হয় না। এগুলো ওনারাই পাঠান সেগুলো থেকে কমিটি বাছাই করে বিবেচনা করে যে এই কাজটা সাহসিকতা বা সেবার জন্য পদক প্রদানে বিবেচ্য। পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউ পুলিশের স্থাপনা বা সম্পদ রক্ষা করার জন্য পেয়েছেন কি না তা আমাকে দেখতে হবে।

এই মুহূর্তে পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ কোনটি, এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, শুরুতে যে চ্যালেঞ্জটা নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করতে হয়েছে তা হচ্ছে, পুলিশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। পরিপূর্ণ ও কর্মক্ষম সেবা যেন দিতে পারে সে অবস্থায় নিয়ে আসা। এটা আমরা কতটুকু করতে পেরেছি তা আপনারা মূল্যায়ন করবেন।

এখন প্রতিদিনই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, যেমন গত এক দেড় মাসে প্রতি মুহূর্তে আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়েছে নানা ধরনের আইন-শৃঙ্খলা প্রস্তুতি নষ্ট করার চেষ্টা নস্যাৎ করার জন্য। হঠাৎ করে একটা মিছিল আসছে, সমাজের মধ্যে একটা ভীতি তৈরি করছে। অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া। অপপ্রচার বা মিস ইনফরমেশন প্রচার করা। এক একটা সময় একেক ধরনের ওয়েভ আসে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শান্তিপূর্ণ সমাজ তৈরি করা, যাতে করে রাষ্ট্রীয় সব কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে করা সম্ভব হয়। যখন একটা ইভেন্ট আসে যেমন ধরেন ঈদের সময় তখন মনে হয় এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ বা চ্যালেঞ্জ।

সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, বাংলাদেশে আগে জঙ্গি নামে নাটক সাজানো হতো। আপনি কী মনে করেন? জানতে চাইলে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, বাংলাদেশের টোটালি জঙ্গি নেই এটা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য পুলিশ ছাড়াও আমাদের অনেক অর্গানাইজেশন আছে। এর আগে জঙ্গিবাদের অভিযোগে অনেকে কারাগারে গেছেন, কারা ভোগ করেছেন। ২০০৫ সালের জেএমবি ইতিহাস তো আমরা জানি। এই মুহূর্তে আমরা সবাই সজাগ আছি। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিং করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদের এই নেটওয়ার্কটা মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা আমাদের আছে বলে আমি মনে করি।

৫ আগস্টের পরে ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন ধরনের মব তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে। পুলিশ এটি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে আসছিল। এর মধ্যেই আজকে গাজীপুরে মাওলানা রইচ নামে একজনকে মব তৈরির মাধ্যমে মারধর করা হয়। পরে পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হয়। অভিযোগ রয়েছে, যথাযথ চিকিৎসা না দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। এটা পুলিশের অবহেলার কারণে ঘটেছে কি না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, অবহেলা থাকলে তো অবহেলা অবশ্যই। তবে এটা অবশ্যই প্রতিকার হওয়া উচিত। একজন মানুষ আইন অনুযায়ী অবশ্যই চিকিৎসা পাবেন। এই ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো দায় থাকলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে কাউকে বিচার করা শুরু করলে অথবা শাস্তি দেওয়া শুরু করলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। পুলিশ চেষ্টা করছে। আমরা সামাজিকভাবে যতদিন এটা মোকাবিলা করতে না পারি আসলে ততোদিন কঠিন। সবাইকে আসলে মবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। আর পুলিশের প্রতি আস্থাটা যদি পরিপূর্ণ মাত্রায় চলে আসতো তাহলে হয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। আমরা চেষ্টা করছি সেটাই করার জন্য পরিপূর্ণ আস্থা ফিরিয়ে আনতে। কারণ মব হতে না দেওয়া বা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কাজটা তো পুলিশেরই।

পুলিশ সপ্তাহের আয়োজন সম্পর্কে আইজিপি বলেন, এবার পুলিশ সপ্তাহের আয়োজন অনাড়ম্বর ও আনুষ্ঠানিক না করে আমরা শুধু ফাংশনাল বা কার্যকর করতে যাচ্ছি। এবারের পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমার পুলিশ আমার দেশ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। এই স্লোগানের ধারণাটা আমরা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই জনসাধারণের মধ্যে। তারা যেন বলতে পারেন বৈষম্যহীন বাংলাদেশে এই পুলিশ আমাদের।
আনন্দ উৎসব বাদ দিয়ে অনেক বেশি কার্যকর সেশনগুলো করা৷ পেশাগত বিষয়াদি আলোচনা করা, বিগত দিনের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন, ভুল-ত্রুটিগুলো নিজেরাই বের করা এবং সামনের দিনগুলোর জন্য পরিকল্পনা করা। মূলত, এইসব কাজ নিয়ে আমরা ব্যস্ত থাকবো পুলিশ সপ্তাহের এই তিন দিন।

সারা দেশ থেকে পুলিশ ইউনিটের যারা প্রধান পুলিশ সুপার এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ ঢাকাস্থ সদর দপ্তরের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানরা থাকবেন। আমরা কীভাবে আগামী দিনগুলোতে আরো কার্যকর পুলিশ সেবা মানুষকে দিতে পারি এর জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ আছে বা আসবে সেগুলো আমরা কীভাবে উত্তরণ করব অতিক্রম করবো সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলব এই পুলিশ সপ্তাহে।

আমরা মাঠ পর্যায়ে যে পরিস্থিতি সবার কাছ থেকে তা শুনবো, জানবো এবং আগামী দিনে কি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন সেটা শুনবো। গত ১৭ ই মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সুপার ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারদের অ্যাড্রেস করে কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন৷ আমরা সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করব সে আলোচনা আমরা করব।

এবারে পুলিশ সপ্তাহে আমরা নাগরিক সমাজের সাথে একটা আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন রেখেছি। একটা সেশনে ওনাদের মুখ থেকে আমরা শুনতে চাই পুলিশিং এর বিষয়ে তাদের ধারণা কী? তাদের অভিজ্ঞতা শুনবো, তারা কি ধরনের অভিজ্ঞতা সম্মুখীন হচ্ছেন গত ৭/৮ মাসে এবং ৫ আগস্ট এর আগের সময়ে। আমরা আমাদের ভুল ত্রুটি গুলো তাদের কাছে শুনবো আরও সামনে এগোতে পারি সেগুলো তাদের কাছ থেকে শোনার আশা রাখি।

পুলিশ সপ্তাহের এই সময়টা আমরা বরাবরের মতো যারা প্রশংসনীয় কাজ করেছেন সেই সব পুলিশ সদস্যদেরকে আমরা পদক প্রদান করবো। প্রধান উপদেষ্টা সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন, তিনি নিজেই তাদের পদক প্রদান করবেন।

আইজিপি বলেন, পুলিশ সপ্তাহের এই ক্ষণে আমি দেশবাসীকে অভিনন্দন শুভেচ্ছা জানাই। আমরা জনগণের সেবক। ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেন।

তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অনেক সময় অনেক অনৈতিক আবদার আসে। অমুককে বদলি করে দেন, অমুক কাজটি করে দেন অমুককে পদক দেন। আমাকে বিধি-বিধান মেনে পুলিশ পরিচালনা করার দায়িত্ব পালনে প্রার্থনা জানাই। বিধি বিধান মেনে যেন আমি চলতে পারি আর যতটা সম্ভব যেন অনেক কম আবদার আসে।

এফপি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পাক ডিজাইনারের সঙ্গে ছবি তুলে বিতর্কের মুখে কারিনা Apr 29, 2025
img
ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের বিশেষ অভিযানে ৫০ মালদ্বীপ প্রবাসী আটক Apr 29, 2025
img
হজ ফ্লাইট উদ্বোধন, ৩৯৮ জন যাত্রী নিয়ে সৌদির পথে প্রথম ফ্লাইট Apr 29, 2025
img
গুরু নানকের বেশে ছবি ভাইরাল, মুখ খুললেন আমির খান! Apr 29, 2025
img
‘ছোট প্যাকেট বড় ধামাকা’, আইপিএলে ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করলেন ১৪ বছরের বৈভব Apr 29, 2025
img
শহীদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে দানিশ কানেরিয়ার নতুন অভিযোগ: পহেলগাম হামলার পর তীব্র বাকযুদ্ধ Apr 29, 2025
img
চাঁদপুরে নদীতে নেমে নিখোঁজ, ১২ ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার Apr 29, 2025
img
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, অভিযুক্ত চার শিক্ষার্থীর আবাসিকতা বাতিল Apr 29, 2025
আদালতে কিলঘুষি, দৌড় দিলেন সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হক Apr 29, 2025
শিক্ষক ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন Apr 29, 2025