বদলে যাচ্ছে সৌদি আরবের অর্থনীতি!

তেল নির্ভর অর্থনীতি থেকে বের হয়ে এবার নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ করছে সৌদি আরব। ভিশন ২০৩০-এর অংশ হিসেবে নতুন প্রযুক্তি, পর্যটন, বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগ আর মেগা প্রকল্পের ওপর ভিত্তি করে নিজস্ব অর্থনৈতিক মডেলে দ্রুত রূপান্তর ঘটাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতের সৌদি আরব গড়ে তোলা হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে।

আধুনিক স্কাইলাইন, নতুন বাণিজ্যিক জোন, গগনচুম্বী ভবন এটাই যেন সৌদি আরবের ভবিষ্যৎ রূপ। ২০১৬ সালে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করেন। তেল রাজস্বের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বৈচিত্র্যময় ও টেকসই অর্থনীতি গড়ে তোলাই এ ভিশনের লক্ষ্য।

গত কয়েক বছরে দেশটি বিশাল বিনিয়োগ করেছে নতুন খাতে। লোহিত সাগর প্রকল্প, কিদ্দিয়া এন্টারটেইনমেন্ট সিটি এবং সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী মেগা-প্রকল্প নিওম—সবই পরিকল্পনার অংশ। নিওম, যা ভবিষ্যতের শহর হিসেবে তৈরি হচ্ছে, সেখানে থাকবে স্মার্ট সিটি প্রযুক্তি, গ্রিন এনার্জি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক জীবনযাত্রার মডেল।

সৌদি ভ্রমণে আসা এক নারী পর্যটক বলেন, ‘আমি গ্র্যান্ড প্রিক্স দেখার জন্য সৌদি আরবে এসেছি। আমরা দুই দিন সার্কিটে কাটিয়েছি, আর আজ আমরা পুরানো শহরে এসেছি, যা তার উষ্ণ এবং মাটির মতো রঙের জন্য সত্যিই খুব সুন্দর।’

পর্যটন খাতেও বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো সাধারণ পর্যটকদের জন্য চালু হয় ভিসা। তখন থেকে সৌদি আরবের ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক স্থানগুলোতে লাখ লাখ বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন ।

ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটক ও দর্শনার্থীরা আল-বালাদে বিপুল সংখ্যায় আসছেন, যদিও এখন মাঝামাঝি গ্রীষ্মকাল চলছে। এখন এখানে দারুণ প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে।

তবে পরিবর্তন শুধু অর্থনীতিতেই নয়; সামাজিক ক্ষেত্রেও। নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি, আন্তর্জাতিক কনসার্ট ও স্পোর্টস ইভেন্টের আয়োজন—সব মিলিয়ে সৌদি আরব এখন এক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তন সফল হলে আগামী দশকে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের এক নতুন অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।

তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। বিশ্বব্যাপী মন্দা, তেলের দামের ওঠানামা এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এই রূপান্তরের গতিতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তবুও, সৌদি নেতৃত্ব বলছে, তারা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
হজ শেষে দেশে ফিরলেন ৬৫ হাজার ৫৭৩ হাজি Jul 05, 2025
img
‘আমি পাঁচ বছরের মধ্যে বিয়ে করে মা হতে চাই’, জায়েদ খানকে তিশা Jul 05, 2025
img
রোমে পেট্রোল স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত ৪৫ Jul 05, 2025
img
চট্টগ্রামে তাজিয়া মিছিলে আতশবাজি-অস্ত্র নিষিদ্ধ করল সিএমপি Jul 05, 2025
img
উড্ডয়নের আগেই অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়লেন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট Jul 05, 2025
img
আমরা যেনতেন নির্বাচন চাই না : জামায়াত আমির Jul 05, 2025
img
এ কে আজাদের বাসভবনে হামলা, ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা Jul 05, 2025
img
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা Jul 05, 2025
img
৩৬ জুলাই শহীদ হওয়ার খুব কাছাকাছি ছিলাম, সুযোগ এলে পিছপা হবো না: আসিফ Jul 05, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক দিনে নিহত আরও ১৩৮ Jul 05, 2025
img
দেশের ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস Jul 05, 2025
img
আজ মেঘলা থাকবে ঢাকার আকাশ, হতে পারে বৃষ্টি Jul 05, 2025
img
মহিলা দল নেত্রীকে মারধরের অভিযোগে বিএনপি নেতা বহিষ্কৃত Jul 05, 2025
img
একদিন পরই আইনে পরিণত হলো ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ Jul 05, 2025
img
শুটিংয়ে দেরি করায় গোবিন্দকে চড় মারলেন অমরিশ পুরি! Jul 05, 2025
img
মুন্সিগঞ্জে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের Jul 05, 2025
img
৫ দিনের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি না করলে ৭০ শতাংশ শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের Jul 05, 2025
img
রাজধানীর ডেমরা থেকে ফেনীর ছাত্রলীগ নেতা রবিন গ্রেফতার Jul 05, 2025
img
ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে বিক্ষোভ, আওয়ামী লীগ নেতার গ্রেফতার দাবি Jul 05, 2025
রংপুরে জামায়াতের জনসভা মঞ্চে শহীদ আবু সাঈদের বাবা-ভাই Jul 05, 2025