সবার সহযোগিতায় স্বনির্ভর জাতি গড়ে তোলা সম্ভব: প্রধান উপদেষ্টা

সবার সহযোগিতা ও সহমর্মিতার ধারা অব্যাহত থাকলে একটি সাহসী ও স্বনির্ভর জাতি আমরা গড়ে তুলতে পারব, বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।

২০২৪ সালের আগস্ট মাসে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যার ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব নেই, তখন সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিলো এই বন্যা। তখন ঠিক বুঝতে পারছিলাম না যে, এটা স্বাভাবিক বন্যা না। এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন জায়গার বন্যা। এটা কত গভীরভাবে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, সেটারও কোনও ধারণা ছিল না। প্রথমে আন্দাজ করা হচ্ছিল, তাড়াতাড়ি চলে যাবে। যতই দিন যাচ্ছিল, বন্যা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। প্রথমে সবাই জীবন রক্ষায় ত্রাণ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করলো। সারাদেশে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সাহায্যের জন্য। এটা যে কত বড় বন্যা ছিল, সেটা বুঝতে পেরেছি চলে যাওয়ার অনেক পরে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেকেরও কম খরচে ঘর নির্মাণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এজন্য সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০টি পরিবারের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর নির্মাণের ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেলেও সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৩ ডিভিশনের কর্মকর্তারা মাত্র ২৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০০টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা সত্যি আনন্দিত। আমি জানি, গত বন্যার পর থেকে আপনারা অবর্ণনীয় কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। দেশের এই দুঃসময়ে আপনাদের পাশে থাকা আমাদের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব ছিল। সেজন্য গত বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সামলে উঠার সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের জন্য বসত বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। যারা আজকে বাড়ির চাবি পেয়েছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের দুর্দিনে পাশে থাকতে পেরে আমরাও স্বস্তি বোধ করছি যে, আমরা দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, এই বাড়ি আপনাদের একটা অবলম্বন, মাথা গোঁজার জায়গা। এখানে আপনারা পরিবার পরিজন সন্তানদের নিয়ে বসবাস করবেন। যেহেতু ঘরের ব্যবস্থা হয়েছে, এখন আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের দিকেও নজর দিতে হবে। তাদের লেখাপড়া করাবেন, যাতে তারা ভবিষ্যতে ভালো নাগরিক এবং উদ্যোক্তা হতে পারে। দেশের মানুষ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে যে সাহস জুগিয়েছে, সেটি মনের মধ্যে ধারণ করবেন। দেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গেই থাকবে। এই সহমর্মিতা দেশের সব মানুষ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লেই আমরা একটা সাহসী ও স্বনির্ভর জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো।

আরএ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মঙ্গলবারও চলবে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি, স্থগিত বার্ষিক পরীক্ষা Dec 01, 2025
img

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল

ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা Dec 01, 2025
img
পেসারদের ভেতর প্রতিযোগিতা ইতিবাচক বলে মনে করেন টেইট Dec 01, 2025
img
ইমরান মাহমুদুলের সুরে আসছে তাসনিয়ার নতুন গান Dec 01, 2025
img
আদালতে হাজির হলেন নেতানিয়াহু Dec 01, 2025
img
আমি মেসি হতে চাই না: লামিন ইয়ামাল Dec 01, 2025
মিগ-২৯ নিয়ে খামেনির নতুন সামরিক পরিকল্পনা Dec 01, 2025
গাজীপুরে কুরআন তেলাওয়াত করে বেগম জিয়ার জন্য দোয়া প্রার্থনা Dec 01, 2025
img

জবানবন্দিতে সাক্ষী

‘হঠাৎ স্লোগান দিতে দিতে পিলখানায় ঢোকে ২৫ জন’ Dec 01, 2025
img
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জামায়াতের জেলা আমির Dec 01, 2025
img
সেন্টার দখল করে ক্ষমতার চেয়ারে বসবেন সেদিন ভুলে যান : চরমোনাই পীর Dec 01, 2025
img
মসজিদে বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন শবনম ফারিয়া Dec 01, 2025
img
জাতীয় পার্টি নিয়ে কুসুম কুসুম প্রেম চলবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী Dec 01, 2025
img
আদালতের রায়কে ‘প্রহসন’ আখ্যা দিলেন টিউলিপ সিদ্দিক Dec 01, 2025
img
শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫৫ Dec 01, 2025
img
মায়ের নামে প্লট বরাদ্দ নিতে বিদেশ থেকে ফোন করেছিলেন টিউলিপ: আদালত Dec 01, 2025
img

জিল্লুর রহমানের বিশ্লেষণ

ফাঁসির রায়, জুলাই সনদ আর তরুণ ভোট : কোন দিকে যাচ্ছে নতুন বাংলাদেশ? Dec 01, 2025
img
শাকিবের ‘প্রিন্স’-এ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অ্যালেন স্বপন! Dec 01, 2025
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ঐতিহাসিক স্থাপনা কুমিল্লার চণ্ডীমুড়া Dec 01, 2025
বেগম জিয়ার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচন? যা বললেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দিপু Dec 01, 2025