এক বছরের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হলে ভারতীয় এয়ারলাইনস এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষতি হতে পারে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার। আর এমন হলে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য ভারত সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি ভারত সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। সেই চিঠির বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স বলছে, গত সপ্তাহে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ ভারতীয়সহ ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চুক্তি বাতিলসহ কঠোর সব পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার। এর জেরে পাকিস্তানও পাল্টা হুমকি দিয়েছে। দেশটি বলছে, ভারত কঠোর হলে তারাও তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না।
পাকিস্তান সরকার এমন পদক্ষেপ নিলে বিভিন্ন দেশে আকাশপথে যাত্রা আরও দীর্ঘায়িত হবে ভারতের এয়ারলাইনসগুলোর। তাতে জ্বালানি খরচও বেড়ে যাবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ে বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার পাঠানো চিঠি থেকে এ সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল এয়ার ইন্ডিয়া ভারত সরকারের কাছে এই চিঠি পাঠিয়েছে। তাতে অর্থনৈতিক ক্ষতির অনুপাতে একটি ‘ভর্তুকি মডেল’ চেয়েছে তারা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পাকিস্তান থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে প্রতি বছর ৫০ বিলিয়ন ভারতীয় রুপির (৫৯১ মিলিয়ন ডলার) বেশি ক্ষতি হবে।
চিঠিতে লেখা, ‘ক্ষতিগ্রস্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ভর্তুকি একটি ভালো, যাচাইযোগ্য এবং ন্যায্য বিকল্প। পরিস্থিতি উন্নত হলে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা যেতে পারে। এয়ার ইন্ডিয়ার ওপর প্রভাব সর্বাধিক। কারণ আকাশসীমা বন্ধ হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত জ্বালানি পোড়ানো... অতিরিক্ত ক্রু।
এ ব্যাপারে এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মন্তব্য চাওয়া হয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছেও। কিন্তু কেউ মন্তব্য করেননি। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকার এয়ার ইন্ডিয়ার নির্বাহীদেরকে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর ওপর আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মূল্যায়ন করতে বলার পরে চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আরও তিনজন রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ হওয়ার ফলে বিমান সংস্থা শিল্পের ক্ষতি কমাতে ভারত সরকার বিকল্প বিবেচনা করছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে কাজ করার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে, যার মধ্যে রয়েছে চীনের কাছাকাছি কঠিন ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে বিমান চালানো এবং কিছু কর ছাড়।
চিঠিতে এয়ার ইন্ডিয়া সরকারকে কিছু নির্দিষ্ট ওভারফ্লাইট ছাড়পত্রের জন্য চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছে, তবে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। আমেরিকা ও কানাডার ফ্লাইটগুলোতে দীর্ঘ ভ্রমণের সময় বিবেচনা করে অতিরিক্ত পাইলট বহনের অনুমোদন দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করা হয়।
আরআর/এসএন