প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার মুক্ত সাংবাদিকতায় বদ্ধপরিকর।
শুক্রবার (২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘বিগত দিনে সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে। আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল কিছু মানুষকে নিরাপত্তা দিতে।
কিন্তু বিগত সরকার সাংবাদিকদের হাত-পা বাঁধতে এই আইন ব্যবহার করেছিল। অন্তর্বর্তী সরকার মুক্ত সাংবাদিকতায় বদ্ধপরিকর, এই আইন বাতিল হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতাশালীর হস্তক্ষেপ রোধে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এই কমিশন ইতোমধ্যে তাদের প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে।
সরকার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা আরো বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর রাষ্ট্রকাঠামোয় যে পরিবর্তন হয়েছে তার সঙ্গে আমরা এখনো খাপ-খাইয়ে নিতে পারিনি। যে কোনো বিপ্লবের পর পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে কমপক্ষে ২০ বছর সময় নেয়।
কিন্তু আমাদের এখানে ফ্যাসিবাদ পতনের বছর না গড়াতেই তাদের সহযোগী শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। চট্টগ্রামে মিছিল করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় না হলেও নীরবতায় তারা এই সাহস পেয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারত থেকে যখন দেশে ফিরেছিলেন তখন সংবাদ সম্মেলনে যা ঘটেছিল তা ইতিহাসের নিকৃষ্টতম দালালি।
এর চেয়ে নিকৃষ্টতম দল দাসগিরি আর হতে পারে না। প্রশ্ন করার কথা ছিল যেসব চুক্তি হয়েছে তা নিয়ে। কিন্তু আমরা দেখলাম বলা হচ্ছে হাসিনা আন্তর্জাতিক নেত্রী। তার নোবেল পাওয়া উচিত। ভবিষ্যতে কেউ যাতে গণমাধ্যমকে এমন নিচুস্তরে নামাতে না পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আংশিক সত্য কখনো সাংবাদিকতা নয়। পুরোপুরি সত্যটাই সংবাদ, সাংবাদিকতা। সঠিক তথ্যেই সাংবাদিকতা করতে হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৩২টি আইন আছে। কিন্তু সাংবাদিক সুরক্ষায় কোনো আইন নেই। সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করতে হবে।
সিএমইউজে সেক্রেটারি সালেহ নোমান ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য গোলাম মাওলা মুরাদের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মহাসচিব ও পিপলস ভিউ সম্পাদক ওসমান গণি মনসুর, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি প্রকৌশলী জানে আলম সেলিম, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার, চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল হক, বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব রিজাউর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য নীলা আফরোজ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রিজোয়ান সিদ্দিকী, চৌধুরী সিয়াম এলাহী প্রমুখ।
এসএম/টিএ