ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং কোর্সে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীদের না পাঠিয়ে সাধারণ কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৫ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে চালানো অভিযানে এমন সত্যতা পওয়া যায়।
অভিযানে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পাওয়ার পরও জিও না দেওয়া ও ভিন্ন কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীদের বেতন-ভাতা প্রদানে অনিয়ম ও হয়রানি করার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে প্রাথমিক পর্যালোচনায় ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পাওয়ার পরও জিও (গভর্নমেন্ট অর্ডার) নামঞ্জুর করার বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞানীদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণে না পাঠিয়ে ভিন্ন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে কি না তা যাচাইয়ের নিমিত্তে রেকর্ডপত্র অভিযানকালে সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও বেতন-ভাতা প্রদানে অনিয়মের বিষয়টি পর্যালোচনার নিমিত্তে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, গতকালের (সোমবার) অভিযানে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করবে। এরপর সংগৃহীত রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে। যার ভিত্তিতে কমিশন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেবে।
অভিযোগ বলছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, কোরিয়াসহ কয়েকটি দেশে বিজ্ঞানীদের ১৪টি সম্মেলন ও কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য ১৪ জনকে মনোনীত করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। যার মধ্যে একজন বিজ্ঞানীর নামও নেই। যাদের মনোনয়ন করা হয়েছে তাদের সকলেই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদ মর্যাদার কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত নিউক্লিয়ার সিকিউরিটির ওপর একটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং কোর্সে কোনো বিজ্ঞানীকে না পাঠিয়ে পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে। একইভাবে অষ্ট্রিয়ায় ভিয়েনায় ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর নিউক্লিয়ার সিকিউরিটির ওপর অনুষ্ঠিত প্রোগ্রাম, অস্ট্রিয়ায় ইনসাইডার থ্রেট ইউজিং দি শাপারস থ্রিডি মডেলের ওপর কর্মশালা, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত সেইফ ট্রান্সপোর্ট অব রেডিওকেটিভ মেটেরিয়াল প্রোগ্রামসহ ১৪টি কর্মশালায় পাঠানোর জন্য মনোনীত করা হয় সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের।
বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে সাধারণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের নামে বিদেশে পাঠানোয় তা দেশের কতটুকু উপকারে আসছে, এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যার প্রতিকার পেতে তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বেতন বৈষম্য, পদ অবনমন করা ও পদোন্নতি না হওয়াসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
এসএম/এসএন