আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি প্রস্তাব করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা চলতি বছরের মূল এডিপির তুলনায় ৩৫ হাজার কোটি বা ১৩ শতাংশ কম।
তবে নতুন এডিপির প্রস্তাব চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় প্রায় ২ শতাংশ বেশি বরাদ্দ ধরা হয়েছে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য।
চলতি অর্থ বছরের এডিপি সংশোধন করে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত এডিপির এই আকার মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে কমিশনের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
রাজধানী ঢাকার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে এই সভা হয়।
সভায় অংশ নেওয়া পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে জানান, সভায় আগামী অর্থ বছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপির আকারের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এরমধ্যে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা বা ৬৩ শতাংশ বরাদ্দ জোগান দেওয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।
বাকি ৮৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩৭ শতাংশ বরাদ্দ বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে জোগান দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরে এই প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য পরিকল্পনা কমিশনের প্রস্তাবিত এডিপির এই আকার সভায় উপস্থাপন করা হয়। কমিশনের প্রস্তাবিত এই আকার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
আগামী সপ্তাহে এনইসি সভা হতে পারে। ওই বৈঠকে বর্ধিত সভায় অনুমোদন পাওয়া এডিপির এই প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
প্রস্তাবিত এডিপিতে সর্বোচ্চ প্রায় ২৬ শতাংশ বা প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ বা প্রায় ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৪ শতাংশ বা ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকার বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে শিক্ষা খাতের জন্য।
এছাড়া গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলী খাতের জন্য ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা বা ১০ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতের জন্য ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা বা প্রায় ৮ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই পাঁচটি খাতে মোট বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়ে খাতগুলোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
এর বাইরে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা, কৃষি খাতে প্রায় ১০ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা এবং পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ খাতের জন্য ১০ হাজার ৬৪১ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৫ হাজার ৩৮ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রায় ৩ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা, ধর্ম ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা খাতে ২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা, সামাজিক সুরক্ষা খাতে ২ হাজার ১৮ কোটি টাকা, সাধারণ সরকারি সেবা খাতে ১ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা এবং প্রতিরক্ষা খাতে ৪৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরএ