ভূপাতিত বিমান নিয়ে ভারত নীরব, ‘দ্য হিন্দু’র প্রতিবেদন রহস্যজনকভাবে উধাও

ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তান দাবি করেছে, এ অভিযানের জবাবে তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তবে এ নিয়ে একদিকে যেমন ইসলামাবাদ সরব, অন্যদিকে দিল্লির পক্ষ থেকে এসেছে নিরবতা—ফলে ঘটনাটির সত্যতা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা ও বিতর্ক।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসহাক দার ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রথম এই দাবি করেন। পরে আইএসপিআরের মুখপাত্র জানান, ভূপাতিত বিমানের মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফাল, একটি সুখোই ও একটি মিগ-২৯। একই দাবি দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও করেছেন। তিনি জানান, দুটি বিমান কাশ্মীরে ও একটি ভারতের পাঞ্জাবের ভাতিন্ডায় ভূপাতিত হয়েছে।

শেহবাজ দাবি করেন, “ভারতের ৮০টি বিমান নিয়ে পরিকল্পিত আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পাকিস্তান আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল, তাদের বিমান উড়লেই সেগুলো ধ্বংস করার নির্দেশ ছিল।”

তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আসেনি। বরং ভারতের সেনাবাহিনীর সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযানে অংশ নেওয়া সব পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছেন। কিন্তু বিমানগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে কোনো মন্তব্য না করায় আরও প্রশ্ন উঠেছে।

বিভ্রান্তির তালিকায় রয়েছে ভারতের জাতীয় দৈনিক দ্য হিন্দু। তারা প্রথমে তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর প্রকাশ করলেও কিছুক্ষণ পর প্রতিবেদন ও টুইট মুছে ফেলে। ব্যাখ্যাও দেয়নি।

রয়টার্স জানায়, ভারতশাসিত কাশ্মীরে তিনটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। তারা এক ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে ওয়াইয়ান গ্রামে একটি বাড়ির পাশে বিমান ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, অন্তত দুটি বিমান ভূপাতিত হয়েছে। তিনজন ভারতীয় কর্মকর্তাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিবিসি ভ্যারিফাই এবং জেনস ডিফেন্সের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যেসব ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে, সেগুলোর কিছুতে দেখা যাচ্ছে রাফাল বা মিরাজ ২০০০ বিমানে ব্যবহৃত ড্রপ ট্যাংকের অংশবিশেষ। তবে এগুলো বিমান গুলি করে ভূপাতিত করার প্রমাণ নয়, কারণ অনেক সময় এ ধরনের ট্যাংক মিশনের সময় ইচ্ছাকৃতভাবেই ফেলে দেওয়া হয়।

একটি ভিডিওতে দেখা একটি ধ্বংসাবশেষকে ফরাসি ক্ষেপণাস্ত্রের অংশ হিসেবে শনাক্ত করেছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা, যা ভারতীয় রাফাল বা মিরাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এগুলো কিভাবে পড়েছে—যুদ্ধের কারণে, না পরিকল্পিত ডাম্পিং—তা নিশ্চিত নয়।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ