অবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৯ মে) রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেনের পাশে সমাবেশে করেন তারা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আওয়ামী লীগের গদিতে, আগুন জ্বালো, একসাথে’, ‘ ব্যান ব্যান, আওয়ামী লীগ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানান।
সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম লিমন বলেন, আমরা বিগত ১৬ বছরের অধিক সময় ধরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসন দেখেছি। গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই এক স্বৈরাচারের মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিল। আমরা সর্বশেষ দেখতে পেয়েছি, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার ওপর আওয়ামী লীগের হামলায় দেড় হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং তেত্রিশ হাজার মানুষ আহত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এরপরেও আপনারা যদি আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসনের বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেন, তাহলে আমরা ৫ আগস্টের মতো ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, যে আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি করেছে, ২০১৩ সালে শাপলায় গণহত্যা চালিয়েছে, এদেশে বারবার গুম, খুন ও রাহাজানি চালিয়েছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে— সেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। জাপান, জার্মানি ও ইতালিতে যেভাবে ফ্যাসিস্ট দলগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেভাবে ২০২৪ সালের গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ৫ই আগস্টের পরে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আমাদের আবারও মাঠে নাম লাগছে, এটা খুবই দুঃখজনক। যে অন্তবর্তীকালীন সরকার জুলাইয়ের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলো, তাদের প্রধান কাজ ছিল গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, কিন্তু এ বিষয়ে তাদের কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখছি না। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ নিয়ে নিয়েছে। এরপরেও যদি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা না হয়, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ পুনরায় আবার একতাবদ্ধ হবে।
আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল আরও বলেন, বিভিন্ন মহল থেকে ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ হিসেবে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র থেকেও এই চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে কারা রাজনীতি করবে সেটা বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবে, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে আর কোনো রাজনীতি হবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তাদেরকে বিচারিক কার্যক্রমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
আরএম