দেশের ক্রীড়াঙ্গনের মূল কেন্দ্রবিন্দু রাজধানীর জাতীয় স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স। প্রায় সবকটি ক্রীড়া ফেডারেশন ও অবকাঠামো এই প্রাঙ্গণেই অবস্থিত। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই এখানে নেই ক্রীড়াবান্ধব পরিবেশ। ফুটপাতজুড়ে অবৈধ দোকান, রাস্তা দখল করে গাড়ি পার্কিং, দোকানের মালামালে স্বাভাবিক চলাচলও হয়ে ওঠে কষ্টকর। এই বিশৃঙ্খল পরিবেশ সরাতে এবার মাঠে নামল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আজ (১২ মে) প্রথমবারের মতো স্টেডিয়াম এলাকায় পরিচালিত হয়েছে মোবাইল কোর্ট।
মোবাইল কোর্টের নেতৃত্ব দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোসামৎ ইসরাত। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি, দুই পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা। হকি, ভলিবল ও কাবাডি স্টেডিয়ামসহ পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন তারা।
অনেক দোকান নির্ধারিত জায়গা ছাড়িয়ে বাইরে মালামাল রাখায় তাৎক্ষণিক সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে পুনরায় এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে মালামাল জব্দ ও জরিমানার হুঁশিয়ারি দেন ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত।
তিনি বলেন, "আজকের মোবাইল কোর্টটি ছিল সচেতনতামূলক। তাই কাউকে জরিমানা করা হয়নি। তবে এই অভিযান নিয়মিত চলবে। প্রয়োজনে পরবর্তী সময়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দর্শক এবং ক্রীড়াবিদরা যেন পরিচ্ছন্ন ও নির্বিঘ্ন পরিবেশে যাতায়াত করতে পারেন, সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য।"
স্টেডিয়াম এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে। নির্ধারিত দোকানের চেয়ে অতিরিক্ত জায়গা দখল এবং অস্থায়ী দোকান বসানোর সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ পুরনো। এ প্রসঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, "প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পরিষদের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য, স্টেডিয়ামে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার অনুমতি পেতে আট মাস আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে সম্প্রতি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের চারজন অ্যাডমিন ক্যাডার কর্মকর্তার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনার অনুমতি মেলে। তবে এর মধ্যে তিনজন ইতিমধ্যেই বদলি হয়েছেন, বাকি একজন—মোসামৎ ইসরাত—এবারের অভিযানে নেতৃত্ব দিলেন।
এর আগে পরিস্থিতি মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা ছিল সীমিত। আশি ও নব্বইয়ের দশকে এনএসসির তৎকালীন পরিচালক মেজর এনাম কখনও কখনও এককভাবে দোকান নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতেন। এবার শুরু হলো নতুন ধারায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ।
এসএস/টিএ