গর্ত থেকে বেরিয়ে সংস্কারের তালিম দেওয়া হচ্ছে : আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘এখন যারা বড় বড় কথা বলছে, সংস্কারের কথা বলছে, আন্দোলনে তাদের বেশির ভাগের চেহারা দেখি নাই। এদের অনেকে রাস্তায়ও ছিল না। যখন শেখ হাসিনার চাপ তাদের ওপর গেছে, তখন তারা গর্তে ঢুকে গিয়েছিল। এখন তারা গর্ত থেকে বের হয়ে আমাদের সংস্কারের তালিম দিচ্ছে।
 
মঙ্গলবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী’ উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদ।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে কাজগুলো শুরু করা দরকার, সেগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা সেই কাজের আশপাশেও নেই।

বিগত দিনে যেগুলো দেখে এসেছি, মনে হচ্ছে সেগুলো একটি ভিন্ন রূপে আমাদের মধ্যে চালু হয়ে গেছে। এখানে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। আমরা ৩১ দফা সংস্কার দিয়েছি। তার আগে ২৭ দফা সংস্কার বিএনপি দিয়েছে।

তার সাত বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া ‘ভিশন ২০৩০’-এর মাধ্যমে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন। যতই সংস্কারের কথা বলুন, দিন শেষে সংস্কার হতে হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সংস্কার করা যাবে না। এখানে কাউকে আমরা বাংলাদেশের মালিকানা দিইনি, যে আগামীর বাংলাদেশের সংস্কার করবে। সংস্কার হবে গণতান্ত্রিক ও দেশের মানুষের সমর্থনের মাধ্যমে।তার বাইরে সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই।”

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি যেসব সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য হবে, সেগুলোর জন্য আমরা প্রস্তুত। কিন্তু দেরি কেন? আমরা কেন জানতে পারছি না কোথায় ঐকমত্য হয়েছে? সব রাজনৈতিক দল প্রস্তাব দিয়ে বসে আছে। তারা বলছে ঐকমত্য করতে হবে, আমরাও বলছি ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে হবে। তাহলে ঐকমত্যটা কোথায়, আমরা জানতে পারছি না কেন? কেউ যদি মনে করেন ওই শেখ হাসিনার মালিকানা এখন অন্য কারো হাতে গেছে, তারা দেশের সিদ্ধান্ত নেবে, জনগণ কী চায়, না চায় তার কোনো তোয়াক্কা করবে না, সেটা কাউকে দেওয়া হয়নি। দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে কী সংস্কার হবে।’

রাখাইনে মানবিক করিড়র দেওয়া নিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এটা নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন না? মানবিক করিডরের অর্থটা কী? এটা কার সঙ্গে আলাপ হয়েছে? একটা অনির্বাচিত সরকার কথা বলে যাচ্ছে, তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিবিদ তো জানে না, সিভিল সোসাইটির কেউ জানে না। এটা কার এজেন্ডা? এর পেছনে কী আছে। বাংলাদেশকে কী একটি যুদ্ধক্ষেত্রে ঠেলে দিতে চাই? কী স্বার্থে? কার স্বার্থে? এই প্রশ্নগুলো তো সামনে আসবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাড. হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।

এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘শুদ্ধ সাদা এক মেয়ের জীবন’- ক্যাপশনে জীবনের গল্প বললেন পরীমণি Jul 19, 2025
img
‘মার্চ টু গোপালগঞ্জে’ রাষ্ট্রের কত অর্থ ব্যয় হয়েছে, প্রশ্ন মাসুদ কামালের Jul 19, 2025
img
ভোলার চরফ্যাশনে সাড়ে ১৪ কোটি টাকার অবৈধ জাল ও পলিথিন জব্দ Jul 19, 2025
img
কেন প্রেম ভেঙেছিল আলিয়া- সিদ্ধার্থের! Jul 19, 2025
img
আগামী পাঁচ দিনে বাড়বে বৃষ্টির প্রবণতা, উত্তরাঞ্চলে ভারি বর্ষণের সতর্কতা Jul 19, 2025
img
বিএনপিকে খেপিয়ে কীভাবে মাঠে টিকে থাকবেন, জানি না : ইলিয়াস হোসেন Jul 19, 2025
img
সিনেমা হলগুলো দর্শক হারানোর কারণ জানালেন পঙ্কজ ত্রিপাঠি! Jul 19, 2025
img
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ইতিহাস’ গড়ল জামায়াত! Jul 19, 2025
img
‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ শো এর মাধ্যমে সবচেয়ে দামি সঞ্চালক হতে যাচ্ছেন অমিতাভ বচ্চন! Jul 19, 2025
img
কুমিল্লার মুরাদনগরে জনসভা করার ঘোষণা দিলেন ইশরাক Jul 19, 2025
img
অবসর ভেঙে আবারও ফিরেছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার! Jul 19, 2025
img
সৈকতে কারিনার ‘লুঙ্গি ড্যান্স’, নেটদুনিয়ায় ঝড়! Jul 19, 2025
img
জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তায় ১২ হাজার পুলিশ, রয়েছে র‍্যাব-ডিবিও Jul 19, 2025
img
বাসা থেকে অভিনেত্রীর মরদেহ উদ্ধার Jul 19, 2025
img
গায়ানার কাছে হেরে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো রংপুর রাইডার্সের Jul 19, 2025
img
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ট্রাম্পের Jul 19, 2025
img
নির্বাচনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ : আব্দুন নূর তুষার Jul 19, 2025
img
মুক্তির এক বছর আগেই শুরু নোলানের 'দ্য ওডিসি'র টিকিট বিক্রি! Jul 19, 2025
img
ঢাকায় সমাবেশে আসার পথে সড়কে প্রাণ গেল জামায়াত নেতার Jul 19, 2025
img
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে জাতীয় সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু করল জামায়াত Jul 19, 2025