সোশ্যাল মিডিয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত পোস্ট, নজরদারিতে প্রাথমিকের শিক্ষকরা

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সম্প্রতি লক্ষ্য করেছে যে, কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা সরকারি আচরণবিধি অনুসরণ না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনভিপ্রেত ও সরকারবিরোধী পোস্ট, ভিডিও, সরাসরি লাইভ ও মন্তব্যে অংশ নিচ্ছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায়, ১৪ মে ২০২৫ তারিখে 'সোশ্যাল মিডিয়া তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও উপস্থাপন' নামক একটি পুনর্গঠিত কমিটি প্রথম সভা করেছে। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে সরকারি নির্দেশিকা লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শিক্ষকদের অনলাইন গতিবিধির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হবে এবং নির্দেশিকা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

সভায় 'সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ)' এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট পরিপত্র পর্যালোচনা করা হয়। আলোচনায় উঠে আসে যে, কিছু শিক্ষক ও কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন পোস্ট, ভিডিও ও তথ্য শেয়ার করছেন, যা সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী এবং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। এছাড়াও, কিছু শিক্ষক ফেসবুক ও অন্যান্য মাধ্যমে লাইভ করা, বিতর্কিত মন্তব্য, ভিডিও আপলোডসহ নানা কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছেন, যা স্পষ্টতই নির্দেশিকার লঙ্ঘন। একজন সহকারী ইন্সট্রাক্টর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে সরাসরি ট্যাগ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বলেও সভায় উল্লেখ করা হয় ।

সভায় কর্মকর্তারা জানান, মাঠপর্যায়ে বিদ্যমান মনিটরিং টিম থাকলেও কার্যত তারা নিষ্ক্রিয়। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মনিটরিং টিমগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়। প্রতিটি পর্যায়ে ফোকাল পারসন নিয়োগ করে তাঁদের ই-মেইল, ফোন নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর সংগ্রহ করা হবে এবং টিম সদস্যরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে তথ্য আদান-প্রদান করবেন। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত শিক্ষকদের কোনো বিতর্কিত বা নির্দেশিকা-বহির্ভূত কার্যক্রম মনিটরিং করে প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

এছাড়াও, প্রতি দুই মাস পরপর উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সভা আয়োজন করতে হবে এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠাতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে-সব পোস্ট, ভিডিও বা তথ্য সন্দেহজনক মনে হবে, সেগুলো কমিটির সভায় উত্থাপন করে প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার সিদ্ধান্তও হয়েছে ।

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের কেউ নির্দেশিকা বিরোধী কোনো কার্যক্রমে জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণবিধিমালা ও ২০১৮ সালের শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।


এসএস

Share this news on: