এক মাস ধরে বয়ে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে পোলট্রি খামারিদের ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এতে ডিম ও মাংস উৎপাদন কমার শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।এছাড়া ঋণের ফাদে পড়তে যাচ্ছে ৭০-৮০ হাজার খামারি। লোকসানে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রান্তিক খামার।
আজ শুক্রবার সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সারাদেশের খামারিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, প্রান্তিক খামারিদের সর্বনাশ হয়ে গেছে। নরসিংদী, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কাপাসিয়া, পাবনা, রাজশাহী, রংপুর, কক্সবাজার, কুমিল্লা, গাজিপুর, সাভার, কিশরগাঞ্জ, ময়মনসিংহ, ফেনীসহ প্রায় সব জেলাতেই প্রান্তিক খামারিরা আজ এক ভয়াবহ বাস্তবতার মুখোমুখি। তীব্র তাপপ্রবাহ, লাগাতার লোডশেডিং ও বাজারে অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মুরগি।
ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির মৃত্যুহার গড়ে ১০ শতাংশ এবং লেয়ার (ডিম পাড়া) মুরগির মৃত্যু ৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। দেশে খামার রয়েছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার। প্রতিটি খামারে কমপক্ষে ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ মুরগি মারা গিয়েছে যার বাজার মূল্য ৫০ থেকে ১ লাখ টাকার সমপরিমাণ। যদি প্রতিটি খামারে ক্ষতির পরিমাণ গড়ে ৫০ হাজার টাকা ধরা হয় তাহলে লোকসানের পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকা দাঁড়ায়।
এতে প্রান্তিক খামারিরা পুজি হারিয়ে খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে সামনের দিনগুলোতে ডিমের উৎপাদন কমবে ৫ শতাংশ এবং মাংস উৎপাদন কমবে ১০-১৫ শতাংশ। যা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।
বিপিএ অভিযোগ করেছে, মাত্র ২০ শতাংশ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে যে করপোরেট কোম্পানিগুলো। সরকার সেদিকে মনোযোগী হলেও খামারিদের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে না।
অথচ দেশের ৮০ শতাংশ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করেন প্রান্তিক খামারিরা। যারা অবহেলার শিকার। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, তাদের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে গেলেও কি সরকারের টনক নড়বে না?
যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে আগামী দিনে ৭০ থেকে ৮০ হাজার খামারি চরম ঋণের জালে পড়ে খামার বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। প্রান্তিক খাতের এই বিপর্যয় সরাসরি হুমকির মুখে ফেলবে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। তাই অবিলম্বে সরকারের উচিত, প্রান্তিক খামারিদের দিকে নজর দেওয়া এবং কর্পোরেট সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরা। বারবার সতর্ক করার পরেও এই সেক্টর নিয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা আমাদের গভীরভাবে হতাশ করছে।
আরআর/টিএ