পরিবারের গণ্ডিতেই যৌন সম্পর্ক! শহরজুড়ে ছড়াচ্ছে রোগ

পরিবারের মধ্যেই যৌন সম্পর্ক করায় ছড়িয়ে পড়ছে বিরল রোগ স্পোয়ান সিনড্রোম। ‘স্পোয়ান সিনড্রোম এর উপর প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয় ২০০৫ সালে। জিনতত্ত্ব গবেষক সান্তোস ও তাঁর সহযোগী দলের দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল এই রোগ। এটি সাধারণত একটি ছোট ক্রোমোজ়োমাল ত্রুটির কারণে ঘটে। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন অতিরিক্ত উৎপাদন করে। এখনও পর্যন্ত এই রোগের কোনও প্রতিষেধক তৈরি হয়নি্।

ব্রাজিলের সেরিনা ডস পিন্টোসের বাসিন্দা সব মিলিয়ে পাঁচ হাজার। সেই শহরের শিশুরা জন্মানোর পর পরই দুর্বল হয়ে পড়ত। শৈশব থেকেই তাদের চোখ অনিচ্ছাকৃত ভাবে নড়তে থাকে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ধীরে ধীরে এই সমস্ত শিশুর জীবন বন্দি হয়ে যায় হুইলচেয়ারে। এমনকি সহজতম কাজেও সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাদের।

২০ বছর আগেও এই বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাননি স্থানীয়রা। তাঁরা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা বৈবাহিক প্রথার কারণে শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে বিরল এক সংক্রামক ব্যাধি। এই ছোট্ট শহরের শিশুরা ‘স্পোয়ান সিনড্রোমে আক্রান্ত। এটি একটি বিরল বংশগত রোগ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে শরীরকে দুর্বল করে দেয় এই রোগ।

ব্রাজিলের ফেডেরাল ইউনিভার্সিটি অফ রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলের জিনতত্ত্ব গবেষক লুজিভান কোস্টা রেইসের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে, কোনও দম্পতির মধ্যে রক্তের বা পারিবারিক সম্পর্ক না থাকলে বিরল জিনগত ব্যাধি বা অক্ষমতা-সহ সন্তান হওয়ার আশঙ্কা ২-৩ শতাংশ। পরিবারের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হলে গর্ভাবস্থায় এই ঝুঁকি ৫ থেকে ৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়

গবেষকদের ধারণা ‘স্পোয়ান সিনড্রোমের জন্য দায়ী ত্রুটিপূর্ণ জিনটি ৫০০ বছরেরও আগে ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বে প্রাথমিক ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে এসেছিল। রোগীদের জিন ঘেঁটে এই অঞ্চলে একদা পর্তুগিজ, ডাচ এবং ইহুদিদের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। 

মিশরে দুটি স্পোয়ান রোগী পাওয়ার পর এই তত্ত্বটি আরও জোরদার হয়। আরও গবেষণায় দেখা গিয়েছে মিশরীয় রোগাক্রান্তেরা ইউরোপীয় বংশধরদের সঙ্গে সম্পর্কিত। স্পোয়ান সিনড্রোম এর কোনও প্রতিকার নেই। সান্তোসের প্রচেষ্টায় এখানকার জনসাধারণের মনে এই অবস্থা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গিয়েছে।

আরআর/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সীমানা নির্ধারণে আদালতের রায় মেনে চলবে ইসি Sep 18, 2025
img
বাগেরহাটের চারটি আসন পুনর্বহালে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ঘোষণা Sep 18, 2025
img
সততার জন্য বাংলাদেশি তরুণকে পুরস্কৃত করল দুবাই পুলিশ Sep 18, 2025
img
দুর্নীতি দূর না হলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনর্গঠন হবে না : বদিউল আলম Sep 18, 2025
img
অ্যানফিল্ডে দর্শক বিতর্কে লাল কার্ড পেলেন কোচ সিমিওনে Sep 18, 2025
img
আমার কাছে মাঝে মধ্যে মনে হয়, সরকার আছে নাকি নেই : রাশেদ খান Sep 18, 2025
img
৭ কলেজ ইস্যুতে ফের আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা Sep 18, 2025
img
দেশের মিডিয়া এখনও নিয়ন্ত্রিত : নাহিদ ইসলাম Sep 18, 2025
img
আমাকে আয়নাঘরে রাখা হয়েছিল: নাহিদ ইসলাম Sep 18, 2025
img
ইভ্যালির রাসেল ও শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড Sep 18, 2025
img
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আরও ১৭৬ বাংলাদেশি Sep 18, 2025
img
ঢাকায় ফ্রান্স চালু করল অত্যাধুনিক ভিসা সেবা কেন্দ্র Sep 18, 2025
img
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পিআর অচল : নিলোফার মনি Sep 18, 2025
img
চাকসু নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করল ছাত্রদল Sep 18, 2025
img
ফিরেছে নেহাল, স্কোয়াডে নেই আরিফিন Sep 18, 2025
img
সৌদির নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্র নয়, প্রধান সঙ্গী এখন পাকিস্তান Sep 18, 2025
img
দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের গোপন মিশন : রনি Sep 18, 2025
img
পাকিস্তান-সৌদি চুক্তি নিয়ে ভারতের বার্তা Sep 18, 2025
img
কলকাতার বাজারে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশি ইলিশ Sep 18, 2025
img
কথা রাখলেন যোগী আদিত্যনাথ, দিশার বাড়িতে হামলাকারী ২ জন নিহত Sep 18, 2025