ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ আবহ পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ফারাক্কা ব্যারেজ ও ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় জারি করা হয়েছিল লাল সতর্কতা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর অনুযায়ী, পাকিস্তান সীমান্ত থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফারাক্কা ব্যারেজ পর্যন্ত ছিল পাক সেনাদের নজরে। যুদ্ধের আগে আশঙ্কা ছিল ক্ষেপণাস্ত্র হামলার। গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যারাজে যেকোনো হামলা প্রতিহত করতে শুক্রবার (১৬ মে) থেকে শুরু হল সেনা মক ড্রিল।
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণ বঙ্গের সংযোগকারী ফারাক্কা ব্যারেজ অঞ্চলকে আরও সুরক্ষিত করার জন্য আয়োজন করা হলো ‘মাল্টি এজেন্সি মক এক্সারসাইজ’।
ফারাক্কা ব্যারাজের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ)। কিন্তু এদিন এই মহড়ায় অংশ নেন বিএসএফ, সিআইএসএফ, রাজ্য পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা।
ফারাক্কা ব্যারেজ, যা উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গকে গঙ্গা নদীর মাধ্যমে সংযুক্ত করে, সেই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যদি কোনো অপ্রীতিকর বা সন্ত্রাসবাদী ঘটনা ঘটে, তা হলে কিভাবে দ্রুততার সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করবে। সেই কৌশলগত দিকগুলোই এদিনের মহড়ায় পরীক্ষা করা হয়।
মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পে শুক্রবার দুপুরে হঠাৎ এক বিশাল নিরাপত্তা মহড়া চলতে দেখে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীরা।
আন্তর্জাতিক গুরুত্ব সম্পন্ন এই বাঁধে এমন মহড়া দেখে কেউ কেউ প্রথমে আতঙ্কিত হলেও পরে জানা যায়, এটি ছিল একটি পূর্ব-নির্ধারিত মক ড্রিল—অর্থাৎ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি প্রস্তুতিমূলক মহড়া।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি হলেও উত্তেজনার মাত্রা কিন্তু এখনও পুরোপুরি হ্রাস পায়নি। এই পরিস্থিতিতে শুধু সীমান্তবর্তী এলাকাই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও মজবুত করা হল। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রস্তুত সুরক্ষা বাহিনী।
এদিন সিআইএসএফ-এর সিনিয়র কমান্ড্যান্ট মুকেশ কুমার জানান, 'উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের সংযোগ রক্ষাকারী ফারাক্কা ব্যারেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এখানে কোনো ধরনের অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হলে তা আমাদের দেশের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। তাই এখানকার সুরক্ষা আগের থেকে মজবুত করা হয়েছে।'
সিআইএসএফ সূত্রের খবর, ফারাক্কা ব্যারেজের সুরক্ষাকে আরও মজবুত করতে আগের থেকে বেশি সংখ্যক সিআইএসএফ কর্মী নিয়োগ করার পাশাপাশি যে সমস্ত এলাকাগুলোতে নিরাপত্তার অল্প কিছু ফাঁকফোকর ছিল সেখানে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে 'ডেইলি পেট্রোল'।
আরএম