১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে লিবিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন

অবরুদ্ধ গাজায় বসবাসরত প্রায় ২২ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে ১০ লাখ বাসিন্দাকে লিবিয়ায় স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত তিনটি সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে ইসরাইলকে নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য জানানো হচ্ছে।

শনিবার (১৬ মে) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে ট্রাম্প প্রশাসন গাজার ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ায় পাঠাতে একটি স্থায়ী পরিকল্পনা করছে। এই পরিকল্পনার আওতায় শরণার্থীর সংখ্যা ধরা হয়েছে ১০ লাখ।

তবে এখনো লিবিয়ার সরকারের সঙ্গে কোনো চুক্তি হয়নি। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। সম্ভাব্য চুক্তিতে লিবিয়াকে তহবিল প্রদান, বিনামূল্যে আবাসন এবং শিক্ষাবৃত্তির মতো প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

এনবিসি নিউজ দাবি করেছে, মার্কিন প্রশাসন এই পরিকল্পনাকে গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করছে এবং লিবিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে তারও শক্ত প্রমাণ পেয়েছে তারা।

তিনটি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, গাজার ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেওয়ার বিনিময়ে লিবিয়াকে এক দশকের বেশি সময় ধরে আটকে রাখা কোটি কোটি ডলারের তহবিল ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই আলোচনার সর্বশেষ অগ্রগতি ইসরাইলকে জানানো হচ্ছে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ঠিক কতজন ফিলিস্তিনি এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে গাজা ত্যাগ করতে রাজি হবেন, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।

এদিকে, হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় স্থানান্তরের পরিকল্পনার ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না এবং এটি গুজব বলে মনে করেন। তিনি বলেন, “যদি এমন কোনো পরিকল্পনা থেকে থাকে, তবে আমি এর নিন্দা জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “ফিলিস্তিনিরা তাদের মাতৃভূমিতে প্রতিষ্ঠিত এবং মাতৃভূমির প্রতি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে এবং তাদের ভূমি, পরিবার, সন্তানদের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।”

বাসেম নাইম আরও বলেন, “ফিলিস্তিনিরাই একমাত্র সিদ্ধান্ত নেবে, তাদের কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেবল তাদেরই রয়েছে।”

উল্লেখ্য, মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর গত ১৪ বছর ধরে লিবিয়ায় চলছে গৃহযুদ্ধ। পশ্চিমে আব্দুল হামিদ দ্বেইবেহ এবং পূর্বে খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে চলমান ক্ষমতা ও আধিপত্যের লড়াইয়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর দেশটির নাগরিকদের লিবিয়া ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছে।


এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সিনেমা হলগুলো দর্শক হারানোর কারণ জানালেন পঙ্কজ ত্রিপাঠি! Jul 19, 2025
img
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ইতিহাস’ গড়ল জামায়াত! Jul 19, 2025
img
‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ শো এর মাধ্যমে সবচেয়ে দামি সঞ্চালক হতে যাচ্ছেন অমিতাভ বচ্চন! Jul 19, 2025
img
কুমিল্লার মুরাদনগরে জনসভা করার ঘোষণা দিলেন ইশরাক Jul 19, 2025
img
অবসর ভেঙে আবারও ফিরেছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার! Jul 19, 2025
img
সৈকতে কারিনার ‘লুঙ্গি ড্যান্স’, নেটদুনিয়ায় ঝড়! Jul 19, 2025
img
জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তায় ১২ হাজার পুলিশ, রয়েছে র‍্যাব-ডিবিও Jul 19, 2025
img
বাসা থেকে অভিনেত্রীর মরদেহ উদ্ধার Jul 19, 2025
img
গায়ানার কাছে হেরে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো রংপুর রাইডার্সের Jul 19, 2025
img
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ট্রাম্পের Jul 19, 2025
img
নির্বাচনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ : আব্দুন নূর তুষার Jul 19, 2025
img
মুক্তির এক বছর আগেই শুরু নোলানের 'দ্য ওডিসি'র টিকিট বিক্রি! Jul 19, 2025
img
ঢাকায় সমাবেশে আসার পথে সড়কে প্রাণ গেল জামায়াত নেতার Jul 19, 2025
img
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে জাতীয় সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু করল জামায়াত Jul 19, 2025
img
১৭ বছরের পুরোনো বাটন ফোনই সঙ্গী অভিনেতা ফাহাদের, পেছনে রয়েছে চমকপ্রদ কারণ! Jul 19, 2025
img
সপ্তাহ শেষে রাজকুমারের ‘মালিক’ সিনেমার আয় কত? Jul 19, 2025
img
১৩ বছর বয়সে মিনা পাল থেকে অভিনেত্রী ‘কবরী’ হয়ে উঠার গল্প! Jul 19, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ, প্রাণ গেল ৩ পুলিশ কর্মকর্তার Jul 19, 2025
img
সোহরাওয়ার্দীতে নেত্রকোণার ১০ হাজার নেতাকর্মীর মিছিল Jul 19, 2025
img
পটুয়াখালীতে যুবলীগের ৬ নেতা গ্রেফতার Jul 19, 2025