শারজায়তে সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশকে রীতিমতো চাপে ফেলার চেষ্টা করেছিল। একটা সময় মনে হচ্ছিল, সামান্য ভুল হলে স্বাগতিকরা ১৯২ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেও যেতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৭ রানের বড় জয় তুলে নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে এবং দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে।
তবে এমন জয়ের পর অধিনায়ক লিটন দাসের অস্বস্তি স্পষ্ট। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এভাবে খেলা চলতে পারে না এবং দলকে একাধিক জায়গায় উন্নতি করতে হবে।
বাংলাদেশের ইনিংসের দিকে তাকালে দেখা যায়, পারভেজ হোসেন ইমন ৫৪ বলে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি খেলেছেন, যা দেশের দ্রুততম টি-টোয়েন্টি শতক। তার ব্যাটে ভর করে ১৩টি ছক্কায় ১৯১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
কিন্তু আলোর নিচে কিছু অন্ধকার দিকও আছে। পারভেজের সেঞ্চুরিটি যদি একপাশে রাখা হয়, তাহলে দেখা যায় দলের অন্য ব্যাটারদের সর্বোচ্চ স্কোর মাত্র ২০, যা তুলনামূলক খুবই কম, এবং সেটি করেছেন তাওহীদ হৃদয়। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে ‘মিস্টার এক্সট্রা’ থেকে, অর্থাৎ আমিরাতের বোলারদের দেওয়া ২১ রান অতিরিক্ত থেকে। অতিরিক্ত ছাড়া অন্য ব্যাটাররা ৬৬ বলে মাত্র ৭০ রান করেছেন, যা দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হতাশাজনক।
ম্যাচ শেষে লিটন দাস অকপটে স্বীকার করেছেন, “উইকেটটা ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল। ইমন যেভাবে ব্যাট করেছে, তা অসাধারণ। তবে শেষ দিকে তিন উইকেট পড়ার পর আমরা রান তুলতে পারিনি, সেটাই আমাদের দুর্বলতা।”
১৯২ রানের টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে আমিরাতের ব্যাটাররা বেশ এগিয়ে গিয়েছিল। অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম ৩৯ বলে ৫৪ রান এবং রাহুল চোপড়া ২২ বলে ৩৫ রান করেছেন। এছাড়া আসিফ খান ২১ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংসে ম্যাচে ফিরে আসার আশা জাগিয়েছিলেন।
তবে সেখান থেকে বাংলাদেশের বোলাররা যেভাবে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়েছে, সেটাকে লিটন দাস প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, “বোলাররা জানে কীভাবে ফিরে আসতে হয়, কিন্তু আমিরাতের ব্যাটাররাও ভালো খেলেছে। মাঝের ওভারে যেভাবে ব্যাট করেছে, সেটা ওদের কৃতিত্ব। আমাদের বোলিংয়ে আরও মনোযোগ দিতে হবে। এই মাঠে কীভাবে বল করতে হয় সেটা শিখতে হবে। শেষ ওভারে ভালো করতে পারিনি। বোলিংয়ে উন্নতি দরকার।”
সদ্য জয়লাভী বোলারদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সময় আউট করেছেন আসিফ খানকে। তানজিম হাসান সাকিব ২২ রান খরচায় ২ উইকেট পেয়েছেন। মুস্তাফিজুর রহমান ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ছিলেন সবচেয়ে কিপটে। দলের কেউ নিদেনপক্ষে উইকেট না পেয়ে ফিরেননি।
এই জয়ে দলের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন লিটন। তিনি বলেন, “আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সবাই যেভাবে শান্ত থেকে বল করেছে, সেটা অসাধারণ। মাঝখানে মনে হচ্ছিল ম্যাচ ৫০-৫০, কিন্তু বোলাররা সবাই ভালো করেছে।”
এদিন বাংলাদেশের সমর্থনে মাঠে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী দর্শকরাও, যাদের সমর্থন লিটন বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “যেখানেই খেলি, আমাদের সমর্থকরা খেলা দেখতে আসে। তাদের এই সমর্থন সত্যিই দারুণ।”
সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন সিরিজ জয় নিশ্চিত করা।
এসএস/এসএন