পিরোজপুর সদর উপজেলার কলাখালি গ্রামের সরদার এগ্রো ফার্মে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে বিশাল আকৃতির একটি গরু, যার নাম ‘বীর বাহাদুর’। গরুটির ওজন ২৫ মণ, উচ্চতা ছয় ফুট এবং দৈর্ঘ্য আট ফুট। ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টির বয়স ছয় বছর। মালিক সোহেল সরদার গরুটির দাম হাঁকছেন ৮ লাখ টাকা।
গরুটির মালিক জানান, ঢাকার একটি হাট থেকে তিন বছর বয়সে শখ করে গরুটি কেনেন তিনি। এরপর তিন বছর ধরে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালনপালন করা হয় বীর বাহাদুরকে। তার খাদ্যতালিকায় রয়েছে ঘাস, খৈল, কলা, ভুসি ও ভুট্টা। প্রতিদিন চলে বিশেষ যত্ন, দিনে দুই থেকে তিনবার গোসল, ফ্যান–লাইটের ব্যবস্থা এবং আলাদা পরিচর্যা। বীর বাহাদুরের দেখভালে নিযুক্ত কর্মীরা জানান, কখনো কখনো গরুটিকে সামলাতে ৫ থেকে ১০ জন মানুষের প্রয়োজন হয়।
গরুটিকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে এটি। স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ফার্মের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বীর বাহাদুরকে দেখে মুগ্ধ হয়।
গরুটির পরিচর্যাকারী মো. রাজীব ডাকুয়া বলেন, “প্রতিদিন তাকে খাওয়ানো হয় সাইলেজ, ভুসি, ভুট্টা ও চালের কুড়া। ওর সঙ্গে আমার এক ধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।”
পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুদেব সরকার বলেন, “সোহেল সরদারের খামারে থাকা বীর বাহাদুর এখন পর্যন্ত জেলায় সবচেয়ে বড় গরু। প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে তাদের কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া জানান, চলতি বছর পিরোজপুর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৪০ হাজার ২৫৭টি হলেও প্রস্তুত রয়েছে ৪৬ হাজার ৯৩৫টি। ফলে প্রায় ৬ হাজার ৬৭৮টি পশু অতিরিক্ত থাকবে, যা অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব।
জেলায় প্রস্তুত কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে রয়েছে ২৬ হাজার ৯২০টি গরু ও মহিষ, ১৭ হাজার ৭০০টি ছাগল এবং ১৮ হাজার ৮৭টি ভেড়া। জেলায় কোরবানির পশু বিক্রি থেকে প্রায় ২১৮ কোটি টাকার লেনদেন হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরআর/এসএন