বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্যের আমদানিতে ভারত সরকারের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। গত শনিবার (১৭ মে) জারি করা এই নিষেধাজ্ঞার পরদিন, রোববার (১৮ মে), মাত্র ১০টি ট্রাকে হিমায়িত মাছ ও ভোজ্য তেল রপ্তানি হয় ভারতে, যা স্বাভাবিক রপ্তানির তুলনায় অর্ধেকেরও কম। এদিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি।
নিষেধাজ্ঞায় তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাবার, কাঠের ফার্নিচার, ফল ও ফলের জুস, প্লাস্টিক ও পিভিসি সামগ্রী এবং তুলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে আখাউড়া বন্দরের নিয়মিত রপ্তানিযোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিক, পিভিসি পণ্য, তুলা, চিপস, বিস্কুট ও জুস, যার রপ্তানিতে বড় ধাক্কা লাগবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি নিসার উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানি অন্তত ৩০ শতাংশ কমবে এবং প্রতিদিন ৪০-৪৫ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি ব্যাহত হবে। তিনি বলেন, এমনিতেই রপ্তানি পণ্যের তালিকা সীমিত, তার ওপর নিয়মিত রপ্তানিকৃত পণ্যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় আয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে।
১৯৯৪ সাল থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি শুরু হয় এবং তখন থেকেই এটি একটি রপ্তানিমুখী বন্দর হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়, যার মধ্যে হিমায়িত মাছ প্রধান।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই বন্দরের মোট রপ্তানি ছিল ৪২৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ৪৫৩ কোটি টাকার পণ্য।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই রপ্তানি ও রাজস্ব উভয় ক্ষেত্রে পড়বে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি তারা পাননি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েন ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণেই ভারত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান চাচ্ছেন।
টিকে/টিএ