আমের মৌসুমে সিরাজগঞ্জের নানা গ্রামীণ বাজারে নানা জাতের পাকা আমে সেজেছে দোকানপাট। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও স্থানীয় বাগান থেকে আনা আমে বাজারজুড়ে ছড়িয়েছে রঙ ও সুবাস।
শহরের চেয়ে তুলনামূলকভাবে দাম কিছুটা কম থাকায় আশপাশের গ্রামের মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন এসব বাজারে আম কেনার জন্য।
বুধবার (২১ মে) সারাদিন ও বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে সিরাজগঞ্জ জেলার শিয়ালকোল, চন্ডিদাসগাতী, বাজার ভদ্রঘাট, নলকা, নান্দিনা কামালিয়া এবং বড়ধুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারে খেস্যা, আম্রপালি, ল্যাংড়া, ফজলি, লক্ষণভোগসহ নানা জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে। রাজশাহী থেকে আনা আমের দাম কেজি প্রতি ৭০, ৮০ ও ১০০ টাকা পর্যন্ত হলেও স্থানীয় আম ৪০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নলকা বাজারের বিক্রেতা শরীফ খান বলেন, আমি নিজ বাড়ির গাছের খেস্যা আর গুটি আম এনে বিক্রি করছি। সকাল থেকে দুপুরেই ৫০ কেজি বিক্রি হয়ে গেছে। মানুষ এখন পাকা আম খুঁজছে বেশি।
বাজার ভদ্রঘাটের ক্রেতা ফজল শেখ বলেন, শহরে খেস্যা আম ১২০ টাকায় বিক্রি হয়, এখানে ৮০ টাকায় পেলাম। গ্রামের বাজারে ভালো মানের আম তুলনামূলক সস্তায় পাওয়া যায়।
এই বাজারের স্থানীয় কৃষক আলতাফ খান বলেন, গাছভর্তি আম ধরেছে। বাজারে এনে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছি, এতে লাভই হয়। বাড়ির মানুষ, এতো আম খেতে চায় না।
কলেজছাত্র জিহাদ খান বলেন, আমি আম্রপালি আর লক্ষণভোগ কিনেছি ৭০ ও ৮০ টাকা কেজিতে। দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। তবে সামনে হয়ত দাম কমে যাবে।
বিক্রেতা দুলাল খান বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৬০-৭০ কেজি বিক্রি করি। বাড়ির গাছের আম হওয়ায় লোকজন দামাদামি করেই কিনে নেয়।
পাইকারি ক্রেতা মো. খলিলুর রহমান বলেন, এখানকার আম শহরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করলে ভালো লাভ হয়। আমি প্রতিদিনই ৩০-৪০ কেজি কিনে নিয়ে যাই।
ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম খান বলেন, প্রতি বছর এই সময়টায় ভদ্রঘাট বাজারে আম বেচাকেনা ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে। এবার আমের সরবরাহ ভালো, আশা করছি সামনে দাম আরও কিছুটা কমবে। কেবল তো মৌসুম শুরু।
সব মিলিয়ে সিরাজগঞ্জের গ্রামীণ বাজারগুলো এখন আম ক্রয় বিক্রয় বেড়েছে। দাম কিছুটা চড়া থাকলেও মান ভালো হওয়ায় ক্রেতারা পছন্দের জাতের আম কিনে তৃপ্তি পাচ্ছেন। মৌসুমি এই ফল ঘিরে গ্রামের হাটবাজারের বিক্রেতারা লাভবান হচ্ছেন। তবে ক্রেতাদের আশা, সময় যত বাড়বে এবং আমের আমদানি বাড়লে তখন দাম কমবে।
আরএ/টিএ