বিশ্ববাজারে কমল তেলের দাম

বিশ্ববাজারে বড় ধরনের ধাক্কা খেল অপরিশোধিত তেলের দাম। জুলাই থেকে ওপেক+ জোটের সম্ভাব্য উৎপাদন বৃদ্ধির খবর ছড়িয়ে পড়তেই বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম এক লাফে ১.৬ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায়। খবর রয়টার্সের।

ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি কমে দাঁড়িয়েছে ৬৩.৮৬ ডলার, আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৬০.৫৯ ডলার। দুই ধরনের তেলের মূল্যই একদিনে ১ ডলারের বেশি কমেছে, যা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় একদিনের দরপতন।

বিশ্লেষকদের মতে, দাম পতনের মূল কারণ ওপেক+ এর একটি কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত। ব্লুমবার্গ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবসহ জোটের প্রধান সদস্যরা আগামী ১ জুনের বৈঠকে জুলাই থেকে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

বিশ্বব্যাপী তেলের চাহিদা যখন স্থবির, তখন এই বাড়তি সরবরাহ বাজারে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

অনিক্স ক্যাপিটাল গ্রুপের জ্বালানি বিশ্লেষক হ্যারি চিলিগুরিয়ান বলেন, ‘ওপেক এখন মূল্য ধরে রাখার লক্ষ্য নয়, বরং বাজারে শেয়ার ধরে রাখতে চাইছে। এটি কৌশলের বড় রকম পরিবর্তন।’

তেলের দামে চাপ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যও। গত সপ্তাহে দেশটিতে অপরিশোধিত তেল ও জ্বালানির মজুদ প্রত্যাশিত হ্রাসের বদলে বেড়েছে ১৩ লাখ ব্যারেল। বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, মজুদ কমবে। অথচ ইআইএ’র তথ্যে দেখা যায়, মজুদ দাঁড়িয়েছে ৪৪৩.২ মিলিয়ন ব্যারেলে।

এলএসইজি তেল গবেষণার বিশ্লেষক এমরিল জামিল বলেন, ‘এই মজুদ বৃদ্ধি ডব্লিউটিআই তেলের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি তেল রপ্তানি করতে পারে ইউরোপ ও এশিয়ার দিকে।’

বিশ্বের প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি উৎপাদন দ্রুত বাড়ানো হয় অথচ চাহিদা না বাড়ে, তাহলে দাম আরও কমে যেতে পারে।

আরবিসি ক্যাপিটালের বিশ্লেষক হেলিমা ক্রফট বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, ওপেক+ তাদের স্বেচ্ছা উৎপাদন হ্রাস পুরোপুরি কবে তুলে নেবে? গ্রীষ্মের মধ্যেই কি সেই সিদ্ধান্ত আসছে?’

বিশ্লেষকদের মতে, তেলের বাজার এখন সংবেদনশীল অবস্থায় রয়েছে। সামান্য নীতিগত পরিবর্তনও বড় প্রভাব ফেলছে দামে। সবকিছু নির্ভর করছে ১ জুনের ওপেক+ বৈঠকের সিদ্ধান্তের ওপর।

আরআর/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায় দিয়েই দেশে রাজনৈতিক সংকটের শুরু: আপিল বিভাগকে বিএনপি Nov 02, 2025
img
চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ৩ Nov 02, 2025
img
আপিল বিভাগে বিচারকাজ প্রত্যক্ষ করবেন নেপালের প্রধান বিচারপতি Nov 02, 2025
img
অপুর সঙ্গে কাজ বন্ধের কারণ জানাতে নারাজ গৌতম সাহা! Nov 02, 2025
img
ক্যারিবিয়ান সাগরে আরেক নৌকায় মার্কিন বাহিনীর হামলা, নিহত ৩ Nov 02, 2025
img
১৫ বছরের চেষ্টায় নিজস্ব প্রযুক্তির কার্গো বিমান তৈরি করে ইরান Nov 02, 2025
img
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মহিলাদেরকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলবে: নিতাই রায় চৌধুরী Nov 02, 2025
img
শেখ হাসিনার প্লট জালিয়াতি মামলার সপ্তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ Nov 02, 2025
img
সালাহর রেকর্ড ছোঁয়া পারফরম্যান্সে লিভারপুলের স্বস্তির জয় Nov 02, 2025
img
মাদকের বিনিময়ে পণ্য পাচারের সময় আটক ৯ Nov 02, 2025
img
কেনিয়ায় ভূমিধসে নিহত বেড়ে ২১, নিখোঁজ ৩০ Nov 02, 2025
img
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা Nov 02, 2025
img
জীবনের বাস্তবতা নিয়ে নবীনদের সৃজনশীলতার সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন: শারমীন এস মুরশিদ Nov 02, 2025
img
গণভোট করতে হবে নির্বাচনের দিনই: মির্জা ফখরুল Nov 02, 2025
img
বিশ্বের দূষিত শহরের শীর্ষে ভারতের দিল্লি, ঢাকার অবস্থান ১৩তম Nov 02, 2025
img
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা ৬ষ্ঠ দিনের শুনানি চলছে Nov 02, 2025
img
এবার ১৯ বছরের ছোট ব্যবসায়ীর প্রেমে মালাইকা! Nov 02, 2025
img
আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ: প্রধান উপদেষ্টা Nov 02, 2025
img
কানাডার প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চাইলেন ট্রাম্পের কাছে Nov 02, 2025
img
শেষ মুহূর্তের গোলেও হার এড়াতে পারলো না ইন্টার মায়ামি Nov 02, 2025