দক্ষিণ সুদানে ফেব্রুয়ারি থেকে সংঘর্ষে অন্তত ৭৫ জন নিহত : জাতিসংঘ

দক্ষিণ সুদানের সেনাবাহিনী ও প্রেসিডেন্ট সালভা কিইরের প্রতিদ্বন্দ্বী যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষে গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৭৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

শুক্রবার (২৩ মে) জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার তুর্ক এ তথ্য জানিয়েছেন।

নাইরোবি থেকে এএফপি জানায়, ফলকার তুর্ক বলেছেন, বিশ্বের নবীন এ রাষ্ট্রটিতে আরো কয়েক ডজন আহত হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

দক্ষিণ সুদান ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।

২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশটি গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত ছিল। এতে প্রায় চার লাখ মানুষের প্রাণহানি এবং ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।
গৃহযুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলোর মধ্যে ২০১৮ সালের ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির ফলে এতদিন ‘অনিশ্চিত শান্তি’ বজায় ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে সহিংস সংঘর্ষের ফলে প্রেসিডেন্ট কিইরের দল তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাইস প্রেসিডেন্ট রিক মাচারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

গত মার্চ মাসে রিক মাচারকে গ্রেফতার করা হয়।

ফলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে জানান, কিইরের এসএসপিডিএফ ও মাচারের এসপিএলএ-আইও এবং তাদের নিজ নিজ মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৭৫ জন বেসামরিক লোক নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছে। হাজার হাজার লোক তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জংলেই রাজ্য ও আপার নীল অঞ্চলে এসপিএলএ-আইও-এর অবস্থানের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুদানের সেনাবাহিনীর ‘নির্বিচারে বিমানের মাধ্যমে বোমাবর্ষণ, নদী ও স্থলে হামলার’ খবর পাওয়া গেছে।

এতে আরো বলা হয়, বেসামরিক জনবহুল এলাকাগুলোতেও হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থা- ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) পরিচালিত একটি চিকিৎসা কেন্দ্রও রয়েছে।

গত বুধবার এসপিএলএ-আইওর সহযোগী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো জংলেই রাজ্যের ফাঙ্গাক কাউন্টিতে হারানো এলাকাগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য একটি পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে আরো বেশি বেসামরিক লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়।

জাতিসংঘের এক হিসাব অনুসারে, উত্তেজনা বৃদ্ধির পর থেকে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ফলকার তুর্ক বলেন, এসপিএলএ-আইওর সঙ্গে যুক্ত কয়েক ডজন বিরোধী রাজনীতিবিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাচার, মন্ত্রী, এমপি, সেনা কর্মকর্তা ও বেসামরিক ব্যক্তিরাও রয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান দেশটিতে ফেব্রুয়ারি থেকে নির্বিচার আটক ও ঘৃণাসূচক বক্তব্য বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, সকল পক্ষকে অবিলম্বে তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে। আমি সকল পক্ষকে ২০১৮ সালের শান্তি চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সহিংসতা বৃদ্ধি ইতোমধ্যে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি ও মানবাধিকারের ব্যাপক লঙ্ঘন পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।

আরএম 


Share this news on:

সর্বশেষ

img
আমরা সবাই বাংলাদেশি, কেউ সংখ্যালঘু নই : রেজাউল করিম Sep 17, 2025
img
শেখ হাসিনা ও তার দুই সন্তানের বিরুদ্ধে চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু Sep 17, 2025
img
দোহায় হামলার জন্য নেতানিয়াহুকে শাস্তি পেতে হবে : কাতার Sep 17, 2025
img
আমার জার্নিটা অনেক কষ্টদায়ক : আফরান নিশো Sep 17, 2025
img
টানা ৪ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা Sep 17, 2025
img
দেশের ৪ বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস Sep 17, 2025
img
ডিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় লেনদেন ২০৮ কোটি টাকা Sep 17, 2025
img
আজ ঐতিহাসিক ‘শিক্ষা দিবস’ Sep 17, 2025
img
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলা : দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে Sep 17, 2025
img
জামায়াত যেভাবে শত্রুদের অ্যাটাক করে, অন্য কোনো পার্টি করে না : রুমিন ফারহানা Sep 17, 2025
img
জাপানের বিমানবন্দরে ধরা পড়লো পাকিস্তানের ‘নকল ফুটবল দল’ Sep 17, 2025
img
ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু, প্রথম চালানে গেল ৩৭.৪৬ মেট্রিক টন Sep 17, 2025
img
ছয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন করে দায়িত্ব থেকে মুক্তি চাই: সুশীলা কার্কি Sep 17, 2025
img
যুক্তরাজ্যে এআই খাতে ৬৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ গুগলের! Sep 17, 2025
img
গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে শ্রমিকের সিগারেট খাওয়ায় বিস্ফোরণ, দগ্ধ ১০ জন Sep 17, 2025
শিশুদের নামাজী বানাবেন যেভাবে | ইসলামিক টিপস Sep 17, 2025
img
চাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন আজ Sep 17, 2025
img
আমি অযথা গালাগালির পক্ষে না : আজিজুল হাকিম Sep 17, 2025
img
ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প বাঁচাতে ঋণের মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুবিধা Sep 17, 2025
img
আমাদের দাবিটা শুরু থেকেই ছিল গণপরিষদ নির্বাচন : সারোয়ার তুষার Sep 17, 2025