তখন লতা মঙ্গেশকর সঙ্গীত জগতে ইতোমধ্যেই নিজের অবস্থান পাকা করে ফেলেছেন, আর ছোট বোন আশা ভোঁসলে লড়াই করছেন নিজের জায়গা তৈরি করতে। বলিউড শাদির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মাত্র ১৬ বছর বয়সে লতার সেক্রেটারি গণপথরাও ভোঁসলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান আশা। সেই সময় গণপথরাওয়ের বয়স ছিল প্রায় ৩১, আশার দ্বিগুণের কাছাকাছি।
এই সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসতেই লতা ছোট বোন আশার সঙ্গে সব যোগাযোগ ছিন্ন করেন। পরবর্তীতে আশা গণপথরাওকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। সেই বিবাহের ফলে দুই বোনের মাঝে দুরত্ব আরও বেড়ে যায়।
তবে কিছুদিনের মধ্যেই আশা একটি পুত্রসন্তানের, হেমন্তের জন্ম দেন। তার জন্মের সুখবরেই মঙ্গেশকর পরিবার আশাকে আবার আপন করে নেয়। বোন ও নবজাতককে বরণ করে নেন লতা মঙ্গেশকর।
আশার সঙ্গে মঙ্গেশকর পরিবারের সবকিছু ঠিক হয়েই যাচ্ছিল, এমন সময় বেঁকে বসেন আশার স্বামী গণপথরাও। তিনি একদমই চাইতেন না আশা তার বাপের বাড়ির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখুন। এই নিয়ে নিত্যদিন অশান্তি লেগেই থাকত ভোঁসলে পরিবারে। এর মাঝেও আশা-গণপথের আরও দুই সন্তানের জন্ম হয়। তিন সন্তানের জননী আশা পরিবার নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন।
এদিকে, ততদিনে লতার খ্যাতি আকাশচুম্বি। জনপ্রিয়তার মধ্যগগনে বিরাজমান লতার যশ সইতে পারছিলেন না গণপথরাও। আশারও তখন কাজের অফার আসা কমতে থাকে। ভয় পেতে শুরু করেন গণপথ। তিনি নাকি চাইতেন, স্ত্রী আশা অনেক-অনেক উপার্জন করুন। বড় শ্যালিকা লতার সঙ্গে স্ত্রীকে দেখা করতে দিতে চাইতেন না তিনি। তার ওপর টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন স্ত্রী আশাকে।
একটা সময় পর স্ত্রী আশাকেও সন্দেহ করতে শুরু করেছিলেন গণপথ। ১৯৬০ সালে আশা এবং তিন সন্তানকে বাড়ি ছাড়া হতে বাধ্য করেছিলেন তিনি। তাদের এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন গণপথরাও ভোঁসলে। শুরু হয় আশার জীবনযুদ্ধ। ঘুরে দাঁড়াতে শিখে যান তিনি। একের পর-এর সিনেমায় গান গাইতে থাকেন। একের পর-এক হিটস দিতে থাকেন। ‘গুমরাহ’, ‘ওয়াক্ত’, ‘আদমি অউর ইনসান’, ‘হামরাজ়’-এর মতো সিনেমায় প্লেব্যাক করতে শুরু করেন তিনি। প্রতিটি গানই হিট হয়। তখনই সচিন দেব বর্মনের পুত্র রাহুল দেব বর্মনের সঙ্গে স্টুডিয়োতে আলাপ হয় আশার। তারপর সবটাই রূপকথার গল্প।
আরএ/এসএন