ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বলেছেন জুলাই ঘোষণাপত্র না হলে জুলাইয়ের আন্দোলনকারীদের ভারত আর আওয়ামী লীগ কচুকাটা করবে।
শনিবার (২৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত দেশের চলমান সংকট মোকাবিলায় জুলাই জনতার জাতীয় ঐক্য বিনির্মাণে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শরিফ ওসমান হাদী বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র না হলে জুলাই শহীদ পরিবার কিংবা যারা এই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন তাদের ভারত আর আওয়ামী লীগ মিলে কচুকাটা করবে। ঘোষণাপত্র হলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এই সরকারের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগকে চায় তাদের নৈতিক পরাজয় হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের মাধ্যমে। তাদের চূড়ান্ত পরাজয় হবে জুলাই সনদ তৈরি হলে।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কেন জুলাইয়ের রাজনীতি করলেন না। আমরা এনসিপিকে পরে ধরব। আপনারা বলুন যে জুলাই ঘোষণাপত্রেট জন্য ঢাকা শহর অচল করে দেওয়া হবে। সেখানে আমরা লাখ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করবো।
হাদী বলেন, বিএনপি দিল্লির ছকে পা দিয়েছে। তারা সংস্কার ও বিচারের কথা না বলে শুধু নির্বাচনের কথা বলছে। বিএনপি এটা ২টা কারণে বলে। কারণ তার ২টা ডগডগে স্মৃতি আছে। একটা হচ্ছে ১/১১ এর স্মৃতি। অপরটি হচ্ছে বিএনপি সেনাবাহিনীর পক্ষে থেকে তাদের সুবিধা নিতে চায়।
তিনি বলেন, বিএনপি ২০০৬ এর পর তারা সেনাবাহিনীর কথা মতো চলেনি। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলেছে। সেই সেনাবাহিনী ওয়ান ইলেভেন করে বিএনপিকে শুধু মাইনাস করে আওয়ামী লীগকে শুধু ক্ষমতায় আনেনি, বাংলাদেশকে ধ্বংস করে ফেলেছে। এবার বিএনপি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যেতে চায় না। তারা যদি সেনাবাহিনীর ফাঁদে পা না দেয় তাহলে এনসিপি বা জামায়াত ইসলাম যদি এই ফাঁদে পা দেয়? তাহলে কেউ না কেউ সেনাবাহিনীর সুবিধাটা নেবে। বিএনপি সেই সুযোগ মিস করতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি তোলে। জুলাইয়ের ছাত্র মানে শুধু এনসিপির ছাত্র না। ছাত্র মানে ছাত্রদলও। জুলাইয়ে ছাত্র মানে সারা দেশের আপামর ছাত্র জনতা। আপনারা যদি আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে এনসিপির ছাত্র উপদেষ্টা বলেন তাহলে উপদেষ্টা পরিষদের বিএনপির উপদেষ্টা আছে ৫ জন। তাদেরকেও পদত্যাগ করতে বলেন।
এই সরকারে একজন স্যুটকেস গুছিয়ে বসে আছেন যিনি অপেক্ষা করছেন কখন ড. ইউনূস পদত্যাগ করলেই তিনি প্রধান উপদেষ্টা হবেন বলেও মন্তব্য করেন হাদী।
তিনি বলেন, এনসিপির ভুল তিনটা। সেগুলো হলো- এনসিপি জুলাইকে কুক্ষিগত করেছে, অনেকেই তারা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই ঐক্য মূলত নষ্ট করেছে এনসিপি।
তিনি এক উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, মন চাইলেই পোস্ট দেয়। তিন ঘণ্টা পর ডিলেট দেয়। পরে এসে ক্ষমা চায়। ভাই, আপনি যদি আবেগী হন তাহলে নাটক করেন, আর্ট করেন। আপনাকে উপদেষ্টা কে হতে বলেছে?
শরিফ ওসমান হাদী বলেন, এই সরকারের মধ্যে কেউ কেউ ৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান। এইটায় এই সরকারের বড় দায়। ড. ইউনূসের পরিচয় ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। এই সরকারৈর মধ্যে ইতোমধ্যেই অনেকে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
হাদী আরও বলেন, সরকার ও সেনাবাহিনী এই মুহূর্তে মুখোমুখি অবস্থান করছে। সেনাপ্রধান যে বক্তব্য দিয়েছে সেটি স্পষ্ট একটি রাজনৈতিক বক্তব্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনেক অফিসার আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। যখন আপনারা দেখলেন যে জুনিয়ররা বিদ্রোহ করতে পারে, হায়ারারকি ভেঙে যেতে পারে, বিরাট ম্যাসাকার হয়ে যেতে পারে তখন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, বর্তমান সেনাপ্রধান আপনি এভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন না। সম্ভবত আমাদের সেনাবাহিনী একটি ইন্সটিটিউশনালি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যে দলই আগামীতে ক্ষমতায় আসবে তাদের সেনাবাহিনীকে বলে আসতে হবে।
এ সময় তিনি বর্তমান সরকারকে পুনর্গঠন করে একটি জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানান হাদী।
এসএম/টিএ