গাজার ৭৭ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে নিল ইসরায়েল

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ৭৭ শতাংশ এলাকা বর্তমানে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার মিডিয়া অফিস। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা রোববার (২৫ মে) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, দখলদার বাহিনী সরাসরি স্থল অভিযান, আবাসিক ও বেসামরিক এলাকায় সেনা মোতায়েন, ব্যাপক গোলাবর্ষণ এবং জোরপূর্বক উচ্ছেদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের তাদের ঘরবাড়ি, এলাকা ও সম্পত্তি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। এসবের ফলেই গাজার ৭৭ শতাংশ ভূখণ্ড এখন ইসরায়েলের দখলে।

বিবৃতিতে সংস্থাটি আরও বলেছে, "গাজার মানুষের ওপর অব্যাহত গণহত্যা, জাতিগত নির্মূল, উপনিবেশবাদ, আগ্রাসন এবং দখলদারিত্বের নিয়ন্ত্রণ, সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন এবং নিয়মের স্পষ্ট লঙ্ঘন ও বলপ্রয়োগ করে ইসরায়েল উপত্যকাটি দখল করছে। যা তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়।”

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড পুরোপুরি দখলে না নেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে বলে জানান দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। একইসঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতির কোনও স্থায়ী চুক্তিতে রাজি নন বলেও জানান এ দখলদার। গত বুধবার ২১ মে জেরুজালেমে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা জানি, গাজায় এখনও অন্তত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দি জীবিত রয়েছে এবং আরও প্রায় ৩৮ জন সম্ভবত নিহত হয়েছেন। কিন্তু শুধুমাত্র বন্দিদের উদ্ধারের জন্য স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি বিবেচনায় আনা হতে পারে।”

গাজাভিত্তিক স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, তারা সমস্ত ইসরায়েলি বন্দিকে একক বিনিময়ে মুক্তি দিতে প্রস্তুত, যদি ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ করে, গাজা থেকে সেনা সরিয়ে নেয় এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়। কিন্তু নেতানিয়াহু এই শর্তগুলো পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং গাজা থেকে হামাসকে উৎখাত, তাদের পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা পুনর্দখল করার কথা জোর দিয়ে বলেছেন।

অবশ্য ইসরায়েলের বিরোধী নেতারা এবং বন্দিদের পরিবার অভিযোগ করেছেন, নেতানিয়াহু চরম ডানপন্থি জোটসঙ্গীদের খুশি রাখতে এবং নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন।

বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ বলেন, “নেতানিয়াহুর বক্তব্যের মানে হলো—আগামী বহু বছর গাজা দখলে রাখা হবে”। তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয়ের কথা বলে নেতানিয়াহু মিথ্যা বলছেন।”  সূত্র: আলজাজিরা, আনাদোলু

আরএ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভর্তি বাতিল গোলাম রাব্বানীর, অবৈধ হচ্ছে ডাকসুর জিএস পদও Sep 16, 2025
img
বিএনপি ছাড়া নারীবান্ধব দল বাংলাদেশে আর একটিও নেই : ফারজানা শারমিন Sep 16, 2025
img
বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখিয়েও হতাশ করলেন লিটনরা Sep 16, 2025
img
সীতাকুণ্ডে শিপইয়ার্ডে আগুন, ৮ শ্রমিক দগ্ধ Sep 16, 2025
img
তামিমের ছক্কার রেকর্ড, এক বছরে সর্বাধিক ছয় বাংলাদেশের Sep 16, 2025
img
নারীদের ক্ষমতায়ন ছাড়া উন্নয়ন অসম্পূর্ণ : উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
দিল্লিতে বৈঠকে নতুন অধ্যায় খুলছে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের Sep 16, 2025
img
ব্লক মার্কেটে ২১ কোটি টাকা লেনদেন Sep 16, 2025
img
রাহুল গান্ধীকে ‘পাকিস্তানের ডার্লিং’ বললেন ভারতের মন্ত্রী Sep 16, 2025
img
ব্যর্থতার দায় খুঁজতে কোচিং স্টাফদের তলব বাফুফে সভাপতির Sep 16, 2025
img
ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন চায় শিক্ষার্থীরা, চলতি মাসেই তফসিল দাবি Sep 16, 2025
img
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে CLAS এর আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত Sep 16, 2025
img
এবার রুপার দামেও নতুন ইতিহাস, ভরি কত? Sep 16, 2025
img
ভারত-বাংলাদেশের উচিত পারস্পরিক নির্ভরশীলতাকে জোরদার করা : প্রণয় ভার্মা Sep 16, 2025
img
ডাকসু-জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে দাবি ইউটিএলের Sep 16, 2025
img
স্বর্ণের দামে ফের রেকর্ড, ভরিতে বাড়ল ৩ হাজার ৬৭৫ টাকা Sep 16, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Sep 16, 2025
img
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনদিনে ১০৬৩ মনোনয়নপত্র বিক্রি Sep 16, 2025
img
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক মুখপাত্র মেজবাউল হকের পদত্যাগ Sep 16, 2025
img
হানিয়া আমিরের পর ঢাকায় আসবেন ২ পাকিস্তানি গায়ক Sep 16, 2025